তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের একটি ব্যানার নামানোর অভিযোগ উঠেছে জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বাসিরুর রহমান খান চৌধুরী এহিয়ার বিরুদ্ধে। নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে নাটোরে স্বাগত জানিয়ে ব্যানারটি লাগানো হয়েছিল।
এ ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী কানাইখালী এলাকায় অবস্থান নেন। পরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে পুলিশের মধ্যস্থতায় ওই ব্যানার পুনঃস্থাপন করার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে এ ঘটনায় এখনো শহরজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আজ বুধবার নাটোর জেলা শহরের কানাইখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয়রা জানান, আজ বুধবার সকালে এহিয়ার কয়েকজন সমর্থক হকার্স মার্কেট সংলগ্ন একটি ভবনের ছাদের বিলবোর্ডে সাঁটানো প্রতিমন্ত্রী পলকের ব্যানার নামিয়ে ফেলেন। ব্যানারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবি সংবলিত ছিল। এ সময় নাটোর শহরে বাইরের কোনো এমপির ব্যানার লাগাতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। ঘটনাটি জানাজানি হলে বিপুলসংখ্যক আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী কানাইখালী এলাকায় অবস্থান নেন। এ সময় তাঁরা বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে ব্যানারটি পুনঃস্থাপন করা হয়।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আযম স্বপন বলেন, ‘আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও ২৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ-ভারত কালচারাল মিটের আয়োজন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে দুই দেশের মন্ত্রী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও শিল্পীদের স্বাগত জানিয়ে ব্যানারটি করা হয়েছিল। স্থানীয়রা ব্যানারটি খুলে ফেলতে দেখে আমাদের খবর দেয়। আমরা এসে দেখি সেটি খুলে নেওয়া হয়েছে। অথচ দুই দিন আগে কালচারাল মিটের আহ্বায়ক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী একটি মোবাইল ফোন কোম্পানির থেকে ওই বিলবোর্ডটি উপভাড়া নেন। ২০ তারিখ পর্যন্ত সম্মেলনের ব্যানার প্রদর্শনের জন্য ভাড়ার অর্ধেক টাকা অগ্রিম পরিশোধ করেন তিনি।’
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের নির্দেশে বাসিরুর রহমান খান এহিয়া চৌধুরী এই ব্যানার অপসারণ করিয়েছেন। জুনাইদ আহমেদ পলক সিংড়া আসনের সাংসদ হওয়ার নাটোর শহরে কখনো কোনো ব্যানার স্থাপন করেন না। সম্মেলন উপলক্ষে তিনি (পলক) ব্যানার স্থাপন করার অধিকার রাখেন। তাঁর এ অধিকার খর্ব করা হয়েছে। সাংসদ শিমুলের লোকজন সম্মেলনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্ট করার চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল বলেন, ‘আমি প্রতিমন্ত্রী পলকের ব্যানার নামানোর নির্দেশ দিইনি। বরং যখন শুনেছি তাঁর ব্যানার কে বা কারা নামিয়েছে, তখন পুলিশকে জানিয়ে তা আবার পুনঃস্থাপন করার নির্দেশ দিয়েছি।’
এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বাসিরুর রহমান খান চৌধুরী এহিয়ার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
জেলা পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ব্যানার নামানোর ঘটনা জানার পর পুলিশের সহযোগিতায় তা আবার পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক থাকে সে লক্ষ্যে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে আছে।