নওগাঁর ধামইরহাটে পটোল চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন কৃষক সুজাউল করিম (৬২)। তিনি উপজেলার উত্তর চকযদু ৬ নম্বর ওয়ার্ডে মৃত কিষিমদ্দীন মণ্ডলের ছেলে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ধামইরহাট ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের নেউটা এলাকার বাসিন্দা কৃষক সুজাউল করিম। তিনি প্রায় ৪৫ শতাংশ জমিতে বাঁশের তৈরি ঝাংলার (চাটাই) ওপরে পটোলের চাষ করেছেন। বাগানের তিন সারিতে রোপণ করা পটোলগাছের একদিকে থোকায় থোকায় ফুটেছে ফুল, অন্যদিকে দেখা মিলছে ছোট-বড় পটোল।
বাগান থেকে প্রতি সপ্তাহে ৮ থেকে ১০ মণ পটোল তিনি বাজারে বিক্রি করেন। এতে সপ্তাহে ভ্যানভাড়া ও লেবারসহ ৭০০ টাকা খরচ হয়। বছরের এপ্রিল আর মে দুই মাসে ভালো ফলন ও দাম পাওয়া যায়। বাকি সাত মাস বাজারদর কম হলেও সর্বনিম্ন ৬০০ টাকা মণ দরে পটোল বিক্রি করা হয়। বর্তমানে হাটবাজারে ৬০ টাকা কেজি দরে প্রতিমণ পটোল ২ হাজার ৪০০ টাকায় কেনাবেচা হওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছেন পটোলচাষি সুজাউল করিম।
এ বিষয়ে কৃষক সুজাউল করিম জানান, গত বছর ফাল্গুন মাসের প্রথম দিকে তিনি পটোলের গাছ লাগান। এরপর পরিচর্যার জন্য পানি, সার, সুতা, বিষ, বাঁশের তৈরি ঝাংলা ও লেবার খরচ বাবদ বছরে তাঁর ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ভালো ফলন হওয়ায় গত বছর এই বাগান থেকে পটোল বিক্রি করে ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা আয় করেন।
কৃষক সুজাউল করিম আরও বলেন, ‘প্রথমে ফুলকপির চাষ করেছিলাম। কপি বছরে একবার ফলন হওয়ায় দীর্ঘমেয়াদি ফসল হিসেবে পটোলকে বেছে নিই। দ্বিতীয় বছরে এসেও পটোলের ভালো দাম ও ভালো ফলন পাওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছি।’
প্রতিবেশী কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, ‘পটোলের এক গাছ থেকে তিন বছর পর্যন্ত যে ফলন পাওয়া যায়, তা আমার জানা ছিল না। পটোল চাষি সুজাউল করিমের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে এবার আমার ১৫ শতাংশ জমিতে পটোলগাছ লাগিয়েছি। আশা করছি ভালো ফলন পাব।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌফিক আল জুবায়ের জানান, পটোল অবশ্যই একটি লাভজনক ফসল। একজন কৃষক সঠিক নিয়মে পটোল চাষাবাদ করলে ৩৩ শতাংশ জমি থেকে বছরে ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকা নিট আয় করা সম্ভব। বাজারে পটোলের দামও থাকে ভালো। এতে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হন কৃষক।