নোয়াখালী উপজেলায় লকডাউন অমান্য করায় জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৮৬ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অন্যদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলাভিত্তিক লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারঘোষিত লকডাউনে নোয়াখালীতে সব ধরনের দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে গত কয়েক দিনের তুলনায় সড়কে ছোট যানবাহন, ব্যক্তিগত গাড়ি ও মানুষের উপস্থিতি কিছুটা বেড়েছে। জেলার বিভিন্ন সড়কে কয়েকটি অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল চলাচল করতে দেখা গেছে।
জেলা শহর মাইজদী, সোনাপুর, বাণিজ্যিক চৌমুহনীসহ বড় বাজারগুলোর সব শপিং মল, মার্কেট বন্ধ থাকলেও কিছুসংখ্যক দোকানের শাটার অর্ধেক খোলা রেখে ব্যবসা চালাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ভ্রাম্যমাণ আদালত ও প্রশাসনের উপস্থিতিতে দোকান বন্ধ করলেও পরে আবার দোকান খুলছেন তাঁরা। মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতন করতে পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি কাজ করছে সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্কাউট সদস্যরা। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো হয়েছে পুলিশের চেকপোস্ট।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার জানান, নোয়াখালী উপজেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১৪৭। জেলার তিনটি পিসিআর ল্যাবে ৪৩৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৩৪ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ৫৯ শতাংশ। এ নিয়ে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১১ হাজার ৮৩৬, যার মধ্যে মারা গেছেন ১৪৭ জন আর সুস্থ হয়েছেন ৭ হাজার ৫৭০ জন রোগী। বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ৪ হাজার ১১৯ জন। শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামের কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৭৯ জন রোগী। জেলায় সংক্রমণের হার কমাতে স্বাস্থ্য বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। জনসচেতনতায় করা হচ্ছে মাইকিং, চালানো হচ্ছে প্রচার–প্রচারণা।
জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. খোরশেদ আলম খান জানান, লকডাউন কার্যকর এবং জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতন করতে জেলার বিভিন্ন বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালায়। অভিযানকালে আইন অমান্যকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ১১৪টি মামলায় ৮৬ হাজার ৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জনস্বার্থে আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।