চাঞ্চল্যকর ও বহুল আলোচিত নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের তিন বছরের শিশু তাসফিয়া হত্যাকাণ্ড মামলার প্রধান আসামি শুটার মো. রিমনসহ পাঁচজনকে আজ মঙ্গলবার নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর উপজেলার চর জব্বার থানাধীন চর ক্লার্ক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
গত ১৩ এপ্রিল বিকেল ৪টার দিকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে জান্নাতুল ফেরদাউস তাসফিয়া (৪) নিহত হয়। ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন শিশুটির বাবা মাওলানা আবু জাহের (৩৮)।
প্রসঙ্গত, তাসফিয়াকে নিয়ে বাড়ির পার্শ্ববর্তী মালেকার বাপের দোকান এলাকার বন্ধু স্টোরে যান আবু জাহের। ওই দোকানে গিয়ে তাসফিয়ার জন্য চকলেট, জুস ও চিপস নিয়ে দোকান থেকে বের হওয়ার সময় মহিন, রিমন, আকবর, নাঈমের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একদল সন্ত্রাসী মামুনের দোকানে এসে তুই (আবু জাহের) ওই দিন বৈঠকে ছিলি বলে গালাগালি করে। একপর্যায়ে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে পাশে থাকা গ্যাসের সিলিন্ডারে লেগে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরে তারা দোকান থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা পেছন থেকে তাদের লক্ষ্য করে প্রথমে ইট নিক্ষেপ করলে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয় তাসফিয়া। পরে পেছন থেকে আরও দুই রাউন্ড শটগানের গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীরা। এতে তাসফিয়া ও জাহের গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। গুলিবিদ্ধ তাসফিয়া ও আবু জাহেরকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয় লোকজন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় নেওয়ার পথে কুমিল্লায় পৌঁছালে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা নানির কোলে মারা যায় তাসফিয়া।
মাটি কাটার জের ধরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও মাটি কাটা নিয়ে বিরোধের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ততা ছিলেন না মাওলানা আবু জাহের বা তাঁর মেয়ে তাসফিয়া। তবে মাটি কাটা নিয়ে বৈঠকে ছিলেন এমন অভিযোগে সন্ত্রাসীদের টার্গেট হন মাওলানা আবু জাহের। আর সেই টার্গেটের শিকার হয়ে প্রাণ হারায় তাসফিয়া।