হোম > সারা দেশ > নোয়াখালী

হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ

সৈকতের বুকে বাড়ি পুকুর, চুপ প্রশাসন

ইসমাইল হোসেন কিরন,  হাতিয়া (নোয়াখালী)  

সমুদ্রসৈকতের তীরে নির্মাণাধীন বাড়ি। পাশেই কাটা হয়েছে পুকুর। এ চিত্র নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপ সৈকতের। সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিশাল সমুদ্রসৈকত। তারই এক পাশের মাটি কেটে বানানো হচ্ছে বাড়ি। কেউ আবার বাড়ির আদলে পুকুর কেটে রেখেছে। অনেকে মাটি কেটে নিজেদের সীমানা তৈরি করেছে। গত ৫ আগস্ট রাজনীতির পটপরিবর্তনের পর পর্যটন সম্ভাবনাময় এলাকা নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপ সৈকতের চিত্র এটি। সেখানে চলছে সৈকতের জায়গা দখলের মহোৎসব। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতারা একে অপরের ওপর দোষ চাপালেও প্রশাসন রয়েছে নীরব। এতে হুমকির মধ্যে পড়েছে পর্যটন নিয়ে এই দ্বীপের অপার সম্ভাবনা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নিঝুম দ্বীপের নামার বাজারের পশ্চিম পাশে বিশাল এই সৈকতের উত্তর পাশ অনেকটা দখল হয়ে গেছে। লোকালয় থেকে নদী পর্যন্ত মাটি কেটে বিশাল বিশাল গর্ত তৈরি করা হয়েছে। এরই মধ্যে অনেকে নতুন বাড়ি তৈরি করে ঘর নির্মাণ করেছে। রাতের আঁধারে নয়, এই কাজ করা হচ্ছে দিনদুপুরে মাটি কাটা মেশিন ব্যবহারের মাধ্যমে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ ক্ষেত্রে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হয়নি। এমনকি এই বিষয়ে চোখে পড়ার মতো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি তারা।

কথা হয় নামার বাজারের বৃদ্ধ আব্দুল জলিলের সঙ্গে। জলিল বলেন, ‘তাঁর বাড়ি একটু দক্ষিণ পাশে। কিছুদিন থেকে নামার বাজারের পাশের কিছু লোকজন এসে এই জায়গাগুলো দখল করে নিচ্ছে। বাড়ির পাশে হওয়ায় তিনিও কিছু জমি দখল করেছেন। তবে তিনি শুধু সীমানা দিয়েছেন। বর্ষার পরে মাটি কেটে বাড়ি তৈরি করবেন। তাতে এক মেয়েকে থাকতে দেবেন।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এসব জায়গা বন্দোবস্ত দেওয়া হয়নি। মানুষজন যে যার মতো করে দখল করে নিয়েছেন।’

এ বিষয়ে হতাশা ব্যক্ত করে নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লাভলী আক্তার বলেন, তিনি এই বিষয়ে লিখিতভাবে উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তিন-চার মাস পর্যন্ত এই দখল কর্মকাণ্ড চলছে। নিঝুম দ্বীপের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা নিয়ে প্রশাসনের অবহেলা, নাকি অন্য কিছ—প্রশ্ন তোলেন লাভলী আক্তার।

নিঝুম দ্বীপের পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণের মধ্যে একটি হলো বিশাল এই সি-বিচ। উত্তর-দক্ষিণে এই সমুদ্রসৈকতের দৈর্ঘ্য প্রায় ৫ কিলোমিটার।

প্রতিদিন বিকেল হলে পর্যটকেরা ঘুরে বেড়ান এই বিচে। অনেকে তাঁবু করে রাত কাটান। সরকারিভাবে এখানে লাভ চিহ্নসহ বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যটকদের জন্য তৈরি করা হয়েছে শৌচাগার। কিন্তু দখলে অনেক সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে পড়ছে।

ঘুরতে আসা বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ইফতেখার হোসেন বলেন, এখন বিচের উত্তর দিকে যাওয়া যায় না। মাটি কেটে বিশাল বিশাল স্তূপ করে রাখা হয়েছে। তাতে সৈকতের সৌন্দর্য চরমভাবে ব্যাহত হয়েছে।

নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন জানান, ৫ আগস্টের পর একটি গ্রুপ সমুদ্রসৈকতের এই জায়গা দখল করে নিয়েছে। এতে দলের অনেকের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী শামীম বলেন, ‘নিঝুম দ্বীপের সমুদ্রসৈকতের জায়গা দখল হয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি। ওই ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে দিয়ে বিষয়টি তদন্ত করব। পরে দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে।’

নোয়াখালীতে ৮ দফা দাবিতে কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

এনসিপির হান্নান মাসউদকে হত্যার হুমকি: যুবক গ্রেপ্তার

হাতিয়ায় এনসিপি নেতা হান্নান মাসউদকে হুমকির প্রতিবাদে বিক্ষোভ

হান্নান মাসউদের ৩ সমর্থককে কুপিয়ে জখম

সুবর্ণচরে নদীভাঙন: ২ বছরে ভিটেমাটি হারা চার হাজার পরিবার

নোয়াখালীতে ব্যানার, তোরণ ও বিলবোর্ড অপসারণ করছে প্রশাসন

হাসিনার গুলিকে যারা ভয় পায়নি, তারা আর কাউকে ভয় পাবে না: হান্নান মাসউদ

নোয়াখালীর হাতিয়া: চর দখলের মচ্ছব, গরু-মহিষের খাদ্যসংকট

হাতিয়ায় বিপুল খাদ্যদ্রব্যে ভরা বোটসহ ১২ পাচারকারী আটক

বিএনপি-জামায়াতসহ সব দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান