কয়েক দিনের টানা ভারী বৃষ্টিতে নোয়াখালী জেলা শহরের জলাবদ্ধতা কিছু কমেছে। তবে গ্রামাঞ্চলে নতুন করে পানি বাড়ছে। পানিবন্দী মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠছে। বিভিন্ন উপজেলার ৩৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় দুই হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে আগামীকাল শনিবার জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার পানিবন্দী মানুষ ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে আজ বিকেল পর্যন্ত থেমে থেমে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হচ্ছে। সকালে নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদী আবহাওয়া কার্যালয় জানিয়েছে, গতকাল রাতে ১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
জানা গেছে, বৃষ্টি কমলেও জলাবদ্ধতায় ভোগান্তিতে পড়েছেন জেলার বাসিন্দারা। দুর্গত এলাকার বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। খাল ও নালা দিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি নামতে না পারায় জলাবদ্ধতা দীর্ঘ হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজন।
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ জানান, ভারী বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে আগামীকাল সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ৪৬৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে সদর, কবিরহাট, সুবর্ণচর ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ৩৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ২ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। জরুরি প্রয়োজনের জন্য ১০১টি চিকিৎসক দল ও ৮ হাজার ৭১১ জন স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মজুত রাখা হয়েছে শুকনা খাবার ও ত্রাণসামগ্রী।
জানা গেছে, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণের কারণে জেলার আটটি উপজেলা ও পৌর এলাকাগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব এলাকার বেশির ভাগ সড়ক পানিতে ডুবে রয়েছে। মাইজদীতে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের সামনে এখনো পানি। বাসাবাড়িতে পানি ঢোকায় কয়েক হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। বিশেষ করে, কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উপকূলীয় এলাকার বেশির ভাগ ঘরবাড়ি পানিবন্দী হয়ে রয়েছে। অনেকেই নিজ বসতঘরে পানির কারণে রাত্রি যাপন করতে পারছে না। এর মধ্যে সাপের আতঙ্কও রয়েছে। ভারী বৃষ্টিতে পুকুর ও ঘের ডুবে গেছে। বিভিন্ন খামারে মারা গেছে অনেক মুরগি। তবে এখনো ক্ষতির পরিসংখ্যান করতে পারেনি প্রাণিসম্পদ কার্যালয়। আমনের বীজতলা ও শাকসবজি ক্ষতির শঙ্কায় রয়েছে।