বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে নোয়াখালীর হাতিয়ায় অস্বাভাবিক জোয়ারে চরঈশ্বর ইউনিয়নের চার কিলোমিটার দীর্ঘ বেড়িবাঁধের বড় একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে অন্তত ২০ হাজার পরিবার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, গত বছর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে নির্মিত এই বেড়িবাঁধ তালুকদার গ্রাম, বাদশা মিয়া হাজি গ্রাম, ৭ নম্বর গ্রাম ও হামিদুল্লাহ গ্রামকে জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করে আসছিল। কিন্তু চলতি সপ্তাহে তিন থেকে চার ফুট উচ্চতার জোয়ার ও ঝোড়ো হাওয়ায় বাঁধের প্রায় দুই কিলোমিটার অংশ ভেঙে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রাসেল বলেন, বাঁধের বিভিন্ন অংশে যে পরিমাণ ভেঙেছে, স্বাভাবিক জোয়ারে সম্পূর্ণভাবে বাঁধটি ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরই মধ্যে সামনে বর্ষাকাল, সে সময় সাগর আরও বেশি উত্তাল থাকবে, জোয়ারের উচ্চতাও বাড়বে কয়েক গুণ। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে এটি মেরামত না করলে চরঈশ্বর ইউনিয়নের বেশির ভাগ অংশই সাগরে বিলীন হয়ে যাবে।
চরঈশ্বর ইউনিয়নের বাসিন্দা ফিরোজা বেগম বলেন, ‘জোয়ারে আমার ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। এখন দেখার কেউ নেই। কীভাবে ঘর তুলব জানি না।’
আরেক বাসিন্দা আবুল কালাম জানান, বাঁধের কিছু জায়গায় এক ফুটেরও কম অংশ অবশিষ্ট আছে। দ্রুত মেরামত না হলে পুরো এলাকা জোয়ারে তলিয়ে যাবে।
স্থানীয়রা শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, সামনে বর্ষাকাল। তখন জোয়ারের উচ্চতা আরও বাড়বে। জরুরি ভিত্তিতে মেরামত না হলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘হাতিয়ায় জোয়ারে কয়েকটি ইউনিয়নে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে চরঈশ্বর, নলচিরা, সুখচর ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব ইউনিয়নে নদীর তীরে থাকা বেড়িবাঁধ জোয়ারের পানিতে ধসে গিয়ে বহুলাংশে চিকন হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া আমরা নিঝুমদ্বীপসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের বাঁধের বাইরে বসবাস করা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে তালিকাভুক্তির কাজ করছি। ইতিমধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বেড়িবাঁধ মেরামতসহ ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে।’