হোম > সারা দেশ > নীলফামারী

আমাদের কর্মীরা বিশৃঙ্খল নয়, দেশ গড়ার ক্ষেত্রেও তারা দায়িত্বশীল: জামায়াতের আমির

নীলফামারী প্রতিনিধি

ডোমারে জামায়াতের সমাবেশে ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘৫ তারিখের (আগস্ট) পর আমাদের কর্মীরা বেপরোয়া হয়ে সমাজে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেনি। অথচ সবচেয়ে মজলুম দল হচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আমরা এখানে ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছি। ইনশা আল্লাহ, দেশ গড়ার ক্ষেত্রেও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেব।’

গতকাল বুধবার বিকেলে নীলফামারীর ডোমার উপজেলা পরিষদের মাঠে উপজেলা জামায়াত আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান এ কথা বলেন।

জামায়াতের আমির বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদগুলো আওয়ামী লীগের ছিল। জোর করে ভাই-ভাতিজা, শালা-সম্বন্ধী মিলে দখল করেছিল। এরা এখন পালিয়ে গেছে। মেম্বাররা পালিয়ে গেছে। চেয়ারম্যান নাই, মেম্বার নাই, মানুষ যাবে কেন? এতগুলো মানুষের দায়িত্ব প্রশাসক নেবে? যাদের জনগণ নিজেদের প্রতিনিধি মনে করে না। পৌরসভা ভেঙে দেওয়া হয়েছে, সিটি করপোরেশন ভেঙে দেওয়া হয়েছে, সেখানে কোনো জনপ্রতিনিধি নেই। জেলা ও উপজেলা পরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে, সেখানে কোনো জনপ্রতিনিধি নেই। প্রতিদিন মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে। আমাদের রাজনীতি জনগণের দুর্ভোগ বাড়ানোর জন্য নয়, আমাদের রাজনীতি দুর্ভোগ কমানোর জন্য।’

জামায়াতের আমির ডা. শফিক বলেন, “এ অবস্থায় যদি বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হয়, আমার কাছে সাংবাদিক বন্ধুরা জানতে চেয়েছিলেন, ‘আপনি কী মনে করেন?’ আমি বলেছিলাম, ইট উইল বি দ্য জেনোসাইড অব ইলেকশন। একটা ইলেকশনকে একদম খতম করে দেবে। চরম বিশৃঙ্খলা হবে, রক্তের বন্যায় বাংলাদেশ ভেসে যাবে। আমরা এটা চাই না, আমরা চাই সকল ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন করে, দেশে আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে জনগণকে স্বস্তির সঙ্গে তার ভোট প্রয়োগের সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে।”

আমিরে জামায়াত বলেন, ‘গত সাড়ে ১৫ বছরে যারা নতুন ভোটার হয়েছে, তাদের প্রত্যেককে ভোটার লিস্টে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আওয়ামী লীগ যে পৌনে ২ কোটি ফলস ভোটার তৈরি করে গিয়েছিল, তাদের কেটে সাফ করতে হবে। যারা দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন, তাঁদের বাদ দিতে হবে। এবারকার এই আন্দোলনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা সারা দুনিয়ায় আমাদের সঙ্গে আন্দোলন করেছেন, তাঁদের প্রত্যেকের ভোট নিশ্চিত করতে হবে। এ কাজগুলো করেই একটা সুষ্ঠু নির্বাচনে যেতে হবে। তবে দৈনন্দিন জীবনে মানুষকে কিছু আইনগত কিছু প্রশাসনিক সহায়তা দিতে হবে।’

নির্বাচনে পেশিশক্তি ও কালো টাকার কথা উল্লেখ করে ডা. শফিক বলেন, “বিভিন্ন আসনে যখন মনোনয়ন দেওয়া হয়, তখন পেশিশক্তি আর কালো টাকার বলে ভোটকে প্রভাবিত করে অযোগ্য সন্ত্রাসীরা অনেক টাকায় নির্বাচিত হয়ে আসে। সংসদে একজন মহিলা গিয়েছেন। তিনি কিছুই পড়তে পারেন না, বলতে পারেন না। তাঁর মেয়ে এক পৃষ্ঠা কাগজ লিখে দিয়ে বলেছে, ‘আম্মা, তুমি এইটা বলিও-এইটা বলিও, এইটা বললে হবে।’ তিনি দাঁড়িয়ে কাঁপছেন, ১৭ মিনিটে এক পৃষ্ঠা পড়েছেন, এক পৃষ্ঠার মধ্যে ২৮টা ভুল পড়েছেন। একজন সংসদ সদস্যের কাজ দেশের আইন রচনা করা। এখন বলেন, এ রকম লোকেরা যদি সংসদ সদস্য হন, তাঁরা কি দেশের ভালো আইন তৈরি করার যোগ্যতা রাখেন? রাখেন না বলেই তো কালো আইনের কবলে পড়ে আমরা শেষ হয়ে যাচ্ছি।”

সমাজের ৪০ ভাগ হচ্ছে যুবক এবং যুবকদের ৬০ ভাগ বেকার উল্লেখ করে এই জামায়াত নেতা বলেন, ‘কেন তারা বেকার থাকে, তার অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটা হলো সুশিক্ষার পরিবর্তে কুশিক্ষা। এ শিক্ষা মানুষকে মানুষ বানায় না, এই শিক্ষা যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে না। এ জন্য সার্টিফিকেটের বস্তা নিয়ে এক অফিস থেকে আরেক অফিসে দৌড়াতে হয়। আমরা যুব সমাজকে কথা দিচ্ছি, আল্লাহ যদি এই দেশ পরিচালনার দায়িত্ব আমাদের দেন, ইনশা আল্লাহ নৈতিক শিক্ষার পাশাপাশি পেশাগত দক্ষ শিক্ষা তোমাদের হাতে এমনভাবে তুলে দেওয়া হবে, যেদিন তোমাদের শিক্ষার পাঠ শেষ হবে, সেই দিন তোমাদের হাতে যেমন সার্টিফিকেট আসবে, তেমনি চাকরির অফার লেটারও চলে আসবে। আমরা একটা বেকারের হাত থাকতে দেব না।’

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা ১৮ কোটি মানুষের মাথা সোজা করে দাঁড়াবার একটা স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে চাই। সেই বাংলাদেশ গড়ার একটু ভালোবাসা আমরা আপনাদের কাছ থেকে চাই। একটু ভালোবাসা আপনারা দিলে আপনাদের সাহায্য চাইব, সমর্থন চাইব, দোয়া চাইব, সঙ্গে চাইব, পাশে চাইব। আমাদের লড়াই আপনাদের জন্য, নিজের জন্য, ১৮ কোটি মানুষের জন্য। ৫ তারিখের (আগস্ট) পর আমাদের কর্মীরা বেপরোয়া হয়ে সমাজে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেনি। অথচ সবচেয়ে মজলুম, বড় মজলুম দল হচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আমরা এখানে ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছি, ইনশা আল্লাহ দেশ গড়ার ক্ষেত্রেও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেব’।

জামায়াত প্রধান বলেন, ‘আপনারা গর্বিত উত্তরবঙ্গের মানুষ। এখন সন্তানেরা যে স্লোগান দেয় প্রথম নামটি আপনাদের আবু সাঈদের। আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ। আবু সাঈদের নামটাই আগে আসে। অনেকে আবার শহিদদের নিজের দলের দাবি করেন। শহিদেরা জাতীয় সম্পদ, আমরা দলের ভিত্তিতে তাদের ভাগ করতে চাই না। এদের আমরা মাথার ওপর উঠিয়ে রাখতে চাই। আমরাই একমাত্র দল, আল্লাহর শুকরিয়া, প্রত্যেকটি শহীদ পরিবারে আমরা গিয়ে পৌঁছেছি এবং তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। আমরা শহীদদের নিয়ে রাজনীতি করতে চাই না। শহীদদের আমরা মাথার তাজ বানিয়ে রাখতে চাই। লড়াইয়ের ময়দানে আবারও দেখা হবে ইনশা আল্লাহ। সেই সব লড়াই হবে মানুষের মুক্তির লড়াই, মানবিক বাংলাদেশ গড়ার লড়াই।’

ডিমলায় সার না পেয়ে ডিলারের গুদাম ভাঙচুর-লুট

নীলফামারীতে ট্রাকচাপায় নৈশপ্রহরী নিহত

শ্রমিক নেতাকে মারধর, রংপুর-নীলফামারী বাস চলাচল বন্ধ

লিখিত পরীক্ষায় প্রক্সি দিয়ে পাস, ভাইভায় ধরা খেলেন দুই পরীক্ষার্থী

পলিনেট হাউসে কৃষিতে নতুন দিগন্ত, বছরে সোহেলের লাভ ১০ লাখ টাকা

রেলের জমি দখল করে ভবন, সাবেক কাউন্সিলর-প্রকৌশলীসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বাবার বাড়ি থেকে ফেরার পথে প্রাণ গেল নারীর

নীলফামারীতে পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

কেঁচো সার উৎপাদনে স্বাবলম্বী ডিমলার একাদশী

সৈয়দপুরে বাসচাপায় ভ্যানচালক নিহত