নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে মৃত দেখিয়ে দেড় বছর ধরে বয়স্ক ভাতাবঞ্চিত রাখা সেই সুরধ্বনী রানী করের (৭৮) অবশেষে টাকা পাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সুরধ্বনী চলতি মার্চ মাস থেকে ভাতা পাবেন। পাশাপাশি সুরধ্বনীর মৃত্যুসনদ তৈরি করে তাঁকে ভাতা না দেওয়ার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
সুরধ্বনী তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের নওয়াগাঁও গ্রামের মৃত নরেন্দ্র চন্দ্র করের স্ত্রী। তিনি ৭-৮ বছর ধরে বয়স্ক ভাতা পাচ্ছিলেন। তবে বছরদেড়েক আগে হঠাৎ তাঁর মোবাইল ব্যাংকিং নম্বরে টাকা আসা বন্ধ হয়ে যায়। পরে উপজেলা সমাজসেবা অফিসে গিয়ে জানতে পারেন, তিনি মারা গেছেন। চেয়ারম্যান-মেম্বারের দেওয়া মৃত্যুসনদে সুরধ্বনীকে মৃত দেখিয়ে তাঁর জায়গায় অন্য একজনকে ভাতাভোগী করা হয়েছে। এ বিষয়ে আজকের পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়।
মোহনগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক বলেন, ‘চেয়ারম্যান-মেম্বারের মৃত্যুসনদের ভিত্তিতে নিয়মানুযায়ী সুরধ্বনী রানীর স্থলে অন্যজনকে ভাতাভোগী করা হয়েছিল। সুরধ্বনী যেহেতু জীবিত আছেন বলে জানতে পেরেছি, তাই ওই এলাকার অন্য এক মৃত ব্যক্তির জায়গায় তাঁকে প্রতিস্থাপন করে ভাতা পাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী মাস থেকে তিনি ভাতা পাবেন। এ ঘটনায় তেঁতুলিয়া ইউপির চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জহরকে শোকজ করেছে প্রশাসন।’
ভুক্তভোগী সুরধ্বনী বলেন, ‘কয়েক দিন আগে সমাজসেবা অফিসে গিয়েছিলাম। তাদের কথামতো নতুন একটি মোবাইল নম্বরে নগদ অ্যাকাউন্ট খুলে জমা দিয়েছি। আগামী মাস থেকে ভাতা পাব বলে জানিয়েছেন। স্বামী মারা গেছে ২০ বছর আগে। অনেক কষ্ট করে চলতে হয়। ভাতার টাকাটা পেলে ওষুধপত্র কিনে কোনো রকমে চলতে পারব।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুয়েল আহমেদ বলেন, ‘ঘটনাটি নজরে আসামাত্র দ্রুত সুরধ্বনী রানীর ভাতার ব্যবস্থা করতে সমাজসেবা কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দিই। ইতিমধ্যে তাঁর ভাতার ব্যবস্থা হয়েছে বলে জেনেছি। এদিকে মৃত্যুসনদ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানকে শোকজ করা হয়েছে।’