শেরপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ৫০ রোগীকে একটি ইনজেকশন দেওয়ার পর তাঁদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, তাঁদের ভুল ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে। ওই ইনজেকশন পুশ করার পরপরই রোগীদের শ্বাসকষ্ট, খিঁচুনিসহ নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
গতকাল রোববার রাত ১১টার দিকে হাসপাতালের ৭ নম্বর মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে। ওই ওয়ার্ডে সাড়ে ৩০০ রোগী আছেন। এর মধ্যে ৫০ জন রোগী অসুস্থ হয়ে পড়েন।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, এটি ভুল ইনজেকশনের ফলে নয়; গণ-হিস্টিরিয়ায় (মাস সাইকোজেনিক ইলনেস) তারা আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন।
রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, রোববার রাতে হাসপাতালের সাত তলায় মহিলা ওয়ার্ডে কর্তব্যরত নার্স রোগীদের সেফরাড ইনজেকশন দেয়। সেসব রোগীর বেশির ভাগই পেট ব্যথা, হার্টের সমস্যা (বুক ব্যথা) ও উচ্চরক্ত চাপ সমস্যা নিয়ে ভর্তি আছেন। ইনজেকশন দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই একে একে রোগীরা শ্বাসকষ্ট, খিঁচুনি, বমি ও জ্বরে আক্রান্ত হতে থাকেন। এ সময় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন রোগীর স্বজনেরা।
ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক গিয়ে তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিলে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. হুমায়ুন কবীর নূর বলেন, ‘ঘটনা শোনার পর রাত দেড়টা অবধি আমরা চেষ্টা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী, স্বজন ও কর্তব্যরত নার্সদের সঙ্গে কথা বলে বা অনুসন্ধানে জেনেছি, একমাস যাবত সব ওয়ার্ডে সেফরাড নামক যে ইনজেকশন দেওয়া হচ্ছে সেই ইনজেকশনই মহিলা ওয়ার্ডের রোগীদেরও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অন্য ওয়ার্ডে কোনো সমস্যা না হলেও মহিলা ওয়ার্ডে সমস্যা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে সেফরাড ইনজেকশনটি দেওয়া বন্ধ রয়েছে। যদিও আর কোনো সমস্যা হয়নি। এরপরও আমরা বিষয়টি অধিকতর তদন্ত করে দেখব।’
এ ব্যাপারে শেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, ইনজেকশনের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েননি তারা। মাস হিস্টিরিয়া নামক একটি রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তারা। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ভয় ও অতিরিক্ত আবেগ লক্ষ্য করা যায়। বর্তমানে সবাই সুস্থ ও স্বাভাবিক আছেন।