মাগুরা শহরে বোনের শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার আট বছরের শিশুটির পরিবার দিন আনে দিন খায় অবস্থা। জেলার শ্রীপুর উপজেলায় তাদের বাড়িটিও জীর্ণশীর্ণ। শিশুটির বাবা মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন। বর্গাচাষ করে সংসার চালান। অভাবের কারণে অল্প বয়সে মেয়েকে বিয়ে দিয়ে এখন তিনি অনুশোচনা করছেন।
মাগুরা সদর থানায় শিশুটির বাবার সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার এই প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, ‘আমার তিন মেয়ে আর এক ছেলে। বড় মেয়েটার পর আর একটা মেয়ে আছে। সবার ছোট মেয়েটা থ্রিতে পড়ে। এখন সে মৃত্যুশয্যায়।’
বিলাপ করতে করতে শিশুটির বাবা বলেন, ‘বড় মেয়েটা অল্প বয়সে বিয়ে দিছি অভাবের কারণে। চার মাস আগে বিয়ে দিয়ে এখন ধরা খাইছি। ওর শ্বশুরবাড়ির ছাওয়ালগুলোর চরিত্র ভালো না আমরা জানতাম না। ওর স্বামী আগেও বিয়ে করে গন্ডগোল করে ছাড়াছাড়ি হয়েছে। ওর শ্বশুরের নামে মেয়েলি কেস আছে। ওর ভাশুরও বদমাইশ।’
ওই শিশুর বাবা আরও বলেন, ‘আমার সংসার প্রায় চলে না। কোনো রকম চাষবাস করে কিছু টাকা পালি চাল-ডাল কিনে খাই। মাগুরা আসব যে বাস ভাড়াটাও পকেটে থাকে না। মেয়ের জামাই মাঝে টাকা চাচ্ছিল। কিন্তু দিতে পারি নাই। এরপর থেকে শুনিছি ওরে প্রায় মারত ওরা। এমনকি এসব নোংরা কাজও করত সবাই মিলে। কিন্তু এসব মেয়ে আমারে তো কতো না। ওরা মায়েরে কতো।’
শিশুটির হতদরিদ্র এই বাবা বলেন, ‘বড় মেয়ে প্রায়ই কানত ওর মায়ের কাছে। কী ভুল করেছি আমি বুঝতে পারিনি। চারটি বাচ্চা নিয়ে ভিক্ষা করে হলিও তো চলতি পারতাম। কেনে যে অভাবের তাড়নায় ওরে বিয়ে দিয়ে একটা মেয়েরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিলাম!’
শিশুটির এক চাচা বলেন, ‘এখন তো আর সংসার করা হবে না আমাদের মেয়ের। অকাজ করে সবাই এখন জেলে। সবার ফাঁসি হোক। আমাদের বড় মেয়েকে আমরা বাড়ি নিয়ে যাব। এখন ছোটটা যেন বেঁচে যায় সেই দোয়া করতিছি আল্লাহর কাছে।’
আরও খবর পড়ুন: