ঝিনাইদহের ফুরসুন্দি ইউনিয়নের টিকারী বাজারে আধিপত্যের বিস্তার নিয়ে নৌকা ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়ে মেম্বার প্রার্থী মাহমুদুল হক পলাশ নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ভাঙচুর করা হয় নৌকা প্রার্থীর অফিসসহ অন্তত আটটি মোটরসাইকেল। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহতের ভাতিজা মোহাম্মদ রাজিব জানান, গতকাল বুধবার বিকেলে ধনঞ্জয়পুর বাজারে ফুরসুন্দি ইউনিয়নের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আনারস প্রতীকের আবু সাইদ শিকদার মিছিল করছিলেন। এ সময় নৌকার প্রার্থী শহিদুল ইসলাম শিকদারের সমর্থকেরা সেখানে হামলা করে কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রাতে বিদ্রোহী প্রার্থী আবু সাইদ শিকদারের সমর্থকেরা টিকারী বাজারে নৌকা প্রতীকের অফিসে হামলা করলে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে নৌকা প্রতীকের অফিসে বসে থাকা অবস্থায় মারপিটের শিকার হন মেম্বার প্রার্থী মাহমুদুল হক পলাশসহ কয়েকজন। এরপর পলাশকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে রাখা হলে আজ সকাল ৮টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী আলতাফ হোসেন বলেন, ‘সন্ধ্যায় নৌকা অফিসে দু-পাশ থেকে আনারস প্রতীকের সমর্থকেরা এসে ভাঙচুর শুরু করে। তারা একপর্যায়ে মেম্বার প্রার্থী মাহমুদুল হক পলাশকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করলে পলাশকে আমি টেনে দোকানের মধ্যে নিয়ে আসি।’
নিহতের স্ত্রী শিউলি খাতুন বলেন, ‘ওরা আমার স্বামীকে মারল! আমার স্বামীকে যারা মারল, তাদের বিচার চাই।’
নৌকা প্রার্থীর অফিসে হামলার বিষয়ে আবু সাইদ শিকদার বলেন, ‘তাদের অফিসে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। বাসায় থাকা অবস্থায় আমার ফোন আসে তাদের অফিস ভাঙচুর হয়েছে। আমার সমর্থকেরা এই ভাঙচুর বা মারপিটের ঘটনা ঘটায়নি। তারা নিজেরা এ কাজ করে আমার ওপর দোষ চাপাচ্ছে।’
এদিকে নিহতের ভাতিজা রাজিব বলেন, ‘মূলত ইউপি নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই এমন আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চলে আসছে। আর তারই বলি হলেন আমার চাচা।’
ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, ‘মৃত্যুর পর আমার এক এসআই ওই বাড়িতে গেলে তাঁকেও পিটিয়ে আহত করা হয়। তবে পরিস্থিতি এখন শান্ত। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।