জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় রবিউল ইসলাম নামে ডাকাতির মামলার আসামির শাস্তি দাবি করেছেন এলাকাবাসী। আজ মঙ্গলবার সকালে কাশিড়া বাজারে রবিউল ও তাঁর পরিবারের সব সদস্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন তাঁরা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০১৭ সালে কাশিড়া বাজারে এক রাতে ১৪টি দোকানে ডাকাতির ঘটনায় দুই নম্বর আসামি ছিলেন ওই রবিউল ইসলাম। এ ছাড়া বগুড়া আদমদীঘি থানায় ডাকাতি ও বগুড়া সদর থানার অস্ত্র মামলার আসামিও রবিউল ইসলাম। বক্তারা অভিযোগ করেন, রবিউল এলাকার ব্যবসায়ীদের হুমকি-ধমকি দিয়ে চাঁদা দাবি করেন। কেউ চাঁদা দিতে না চাইলে তাঁকে রবিউল ও তাঁর পরিবারের লোকজন মারধর করেন। বক্তাদের দাবি, গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান রবিউল ও তাঁর পরিবারকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কাশিড়া বাজার পরিচালনা কমিটির (বণিক সমিতি) সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইমলাম বলেন, ‘কিছু বিপথগামী সন্ত্রাসী, কিছু ডাকাত আমাদের কাছে বিভিন্নভাবে চাঁদার দাবি করে এবং বাজারে ডাকাতি করে। সেই ডাকাতদের আইনের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’
স্থানীয় বাসিন্দা আল-আমিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের কাশিড়া গ্রামের ডাকাত রবিউল বিভিন্ন সময় আমাদের কাছে হুমকি-ধমকি দিয়ে চাঁদা দাবি করে। সে কাশিড়া বাজারে দোকানে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত। বাড়িতে ভাত খাইতে গেলেও নাকি রবিউলের অনুমতি নিতে হবে। তাকে ধরতে গেলেই চেয়ারম্যানের কথা বলে, আসলে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কী সম্পর্ক আছে—সেটি জানার বিষয়। চেয়ারম্যান যদি ওই ডাকাত রবিউলের সঙ্গে জড়িত থাকে, তাহলে তাঁকেও আইনের আওতায় আনা হোক।’
গোপীনাথপুর ইউনিয়নের পরিষদের ৭ নম্বর ইউপি সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দা সেলিম মাহবুব বলেন, ‘রবিউল প্রায় সাত বছর থেকে এলাকায় ছিল না। দেড় বছর হলো, সে আবার কাশিড়াতে এসেছে। সে জনসমক্ষে বলে আমি স্বাধীন, আমি মুক্ত। এই রবিউল ডাকাত এখন কাশিড়াবাসীর কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে হিন্দু পরিবারের কাছে চাঁদা দাবি করে, এলাকায় জুয়ার আসর বসায়, বাইর থেকে কেউ এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতে এলে তাঁকে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। প্রতিবাদ করলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। কিছুদিন আগে কাশিড়া বাজারে হান্নান মণ্ডলের দোকান চুরি হয়। পরে রবিউল এসে বাজার সভাপতির কাছে সিসি ক্যামেরার বিষয়ে জানতে চায়। তখন তার গতিবিধি দেখে আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে সাত দিন সময় চায়, চুরি হওয়া তিন-চার লাখ টাকার মাল বের করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু এই এলাকার কিছু অসাধু ব্যক্তি এই ডাকাতকে সহযোগিতা করে আমাদের কয়েকজনের নামে জয়পুরহাট কোর্টে একটি মামলা দায়ের করে। আমাদের একটাই দাবি, রবিউলসহ তার পরিবারের লোকজনকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া হোক।’
এদিকে ডাকাতি মামলার আসামি রবিউলকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘কাশিড়া বাজারে মানববন্ধন থেকে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি কেন, বাংলাদেশের কোনো চেয়ারম্যানই কোনো ডাকাতকে প্রশ্রয় দেয় না। একটি চক্র আমার সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য ওই কথা মানববন্ধনে বলেছে।’
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কাশিড়া বাজারে ডাকাতির মামলার আসামি রবিউল ইসলাম বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। কিছুদিন আগেই আমরা তাকে গ্রেপ্তার করেছি। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ডাকাতিসহ অস্ত্র মামলা রয়েছে।’