যশোরের মনিরামপুরে নিম্ন মানের ইট দিয়ে রাস্তা সলিংয়ের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার কাশিমগর ইউনিয়নের নাদড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কাশিমগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি তৌহিদুর রহমান উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের বরাদ্দে নাদড়া গ্রামে ৪০০ ফুট কাচা রাস্তা সলিংয়ের কাজ করাচ্ছেন। যেখানে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের ২ নম্বর ও ৩ নম্বর ইট।
তাঁদের অভিযোগ, রাস্তা খোঁড়ার পর তিন ইঞ্চি বালু ব্যবহার করার পর ইটের সলিং বুনার নিয়ম। কিন্তু আজ সকালে নামমাত্র বালু ফেলে তারপর ইট বুনার কাজ শুরু করেছেন শ্রমিকেরা। এভাবে কাজ করলে রাস্তা টিকবে না। সঠিকভাবে বালু ফেলে ভালো ইটে রাস্তা না করলে কাজ চলতে দেওয়া হবে না।
কাশিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর নাদড়া ওয়ার্ডের সদস্য মতিয়ার রহমান বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডে ইটের সলিংয়ের কাজের ব্যাপারে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। আজ সকালে রাস্তায় এসে দেখি রাস্তায় কোনো রকম বালু ছড়িয়ে নিম্নমানের ইট দিয়ে কাজ হচ্ছে। চেয়ারম্যান নিজে দায়িত্বে থেকে উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের বরাদ্দে কাজ করাচ্ছেন। স্থানীয়রা এই ইটে কাজ করতে দেবেন না। এ জন্য এলাকাবাসী কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।’
কাশিমগর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিস আলী বলেন, ‘সকালে খবর পেয়ে রাস্তায় এসে দেখি ২ নম্বর, ৩ নম্বর ইট দিয়ে রাস্তার কাজ করাচ্ছেন চেয়ারম্যান তোহিদুর রহমান। এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে সলিং তুলে ফেলছে। আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে দাবি করছি, যেন সঠিক ইটে রাস্তার কাজ হয়।’
রাস্তার সলিং বুনার কাজের ঠিকাদার ওই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মশিয়ার রহমান। তিনি বলেন, ‘চেয়ারম্যান আমাকে ১০০ ফুট ইটের সলিং বুনায় ২ হাজার ২০০ টাকা করে দেওয়ার চুক্তি করেছেন। রাস্তায় যে ইট ফেলা হয়েছে তা ২ নম্বর ও ৩ নম্বর ইট।’
জানা গেছে, মনিরামপুরে কয়েক দিন ধরে ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামী লীগ সমর্থক চেয়ারম্যানরা গ্রেপ্তার হচ্ছেন। এ জন্য কাশিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তৌহিদুর রহমান আত্মগোপনে আছেন।
চেয়ারম্যান তৌহিদুর রহমান মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, নাদড়া গ্রামে উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের ২ লাখ টাকা বরাদ্দে ৪০০ ফুট রাস্তার কাজ করাচ্ছি। বরাদ্দের টাকার ৩৫ শতাংশ উপজেলায় রেখে আসা লাগে। তাতে ভালো ইটে কাজ করব কী করে। এ জন্য ২ নম্বর ইট দিয়ে কাজ করাচ্ছি।
চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন, মতিয়ার মেম্বর কাজে বাধা দিচ্ছে। তিনি নিজেও সাড়ে তিন লাখ টাকায় তাঁর বাড়ির রাস্তা করিয়েছেন। সেখানে মতি মেম্বর আরও নিম্ন মানের ইট ব্যবহার করেছেন।
মনিরামপুরের ইউএনও নিশাত তামান্না বলেন, নিম্নমানের ইটে রাস্তার কাজ করানো যাবে না। কাজ বন্ধ থাকুক। আমি নিজে সরেজমিন কাজ দেখতে যাব।