গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ঐতিহাসিক সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস পালিত হয়েছে। আজ সোমবার বেলা দেড়টার দিকে উপজেলার বাগদা ফার্ম কাটার মোড় এলাকায় কর্মসূচি পালন করা হয়। এ উপলক্ষে সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি পদযাত্রা ও সমাবেশের আয়োজন করে।
কর্মসূচির শুরুতে কাটার মোড় এলাকায় অস্থায়ী বেদিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে একটি পদযাত্রা বের হয়ে দীর্ঘ ৫ কিলোমিটার পথ হেঁটে বাগদা ফার্ম এলাকায় এসে পৌঁছায়। পরে বেলা ২টার দিকে সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন গোবিন্দগঞ্জের সাহেবগঞ্জ ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে।
বক্তারা বলেন, ২০১৬ সালে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ত্রিমুখী সংঘর্ষে তিন সাঁওতালকে হত্যা করা হয়। স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেছে, কিন্তু সাঁওতালরা এখনো অধিকার থেকে বঞ্চিত। ২০১৬ সালে গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের বাড়িঘরে হামলা-অগ্নিসংযোগ-লুটতরাজ ও তিন সাঁওতাল হত্যাকাণ্ডের বিচার বিগত ও বর্তমান সরকার করতে পারেনি। জীবনের নিরাপত্তাসহ বাগদা ফার্মের ১৮৪২ দশমিক ৩০ একর জমি আগের মালিকদের ফেরত দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।
বক্তারা আরও বলেন, ‘সাঁওতালদের রক্তে ভেজা জমিতে রংপুর ইপিজেড নির্মাণের পাঁয়তারা করা হচ্ছে। আমরা সাঁওতাদলের জমিতে ইপিজেড করতে দেব না। প্রয়োজনে রক্ত দেব, কিন্তু এই ভূমিতে ইপিজেড হবে না। এই জমিতে ইপিজেড নির্মাণ নিয়ে সব ষড়যন্ত্র সাঁওতালরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ করবে।’
সমাবেশে বক্তব্য দেন আদিবাসী যুব ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি টনি চিরীন, সাঁওতাল নেতা বার্নাবাস টুডু, প্রিসিলা মুর্মু, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের জেলা আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বাবু, নওগাঁ জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অজিত মুভা, রংপুর জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জোসেফ ফরেন, ঘোড়াঘাট আদিবাসী উন্নয়ন সংস্থার সাংগঠনিক সম্পাদক রিপন বেসরা জয়, রবিদাস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক খিলন রবিদাস, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবীর তনু, সাঁওতাল নেতা তৃষত্তা মুর্মু, স্বপন শেখ, আতাউর রহমান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ১৮৫৫ সালে ভারতে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রথম সাঁওতাল বিদ্রোহ হয়। সেই বিদ্রোহে নিহত হন সাঁওতাল নেতা সিধু, কানুসহ আরও অনেকে। তখন থেকে সাঁওতালরা প্রতিবছর ৩০ জুন সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস পালন করে আসছে।