‘পাঁচ টাকা দিয়ে আধা ঘণ্টা দাঁড়িয়ে টিকিট পেলাম। চিকিৎসক দেখিয়ে ওষুধ নেওয়ার জন্য আবার ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কেন আমরা এভাবে দাঁড়িয়ে থাকব? আমাদের কি কাজ নেই?—এই বাংলাদেশ কি চেয়েছিলাম? হাজারো মানুষ বাচ্চাসহ দাঁড়িয়ে আছে। আমাদের জিম্মি করে কেন আন্দোলন?’
ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে হাসপাতালের ফার্মেসি থেকে ওষুধ না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এক সেবাগ্রহীতা। কথা বলতে বলতে একপর্যায়ে হাতে থাকা প্রেসক্রিপশন ছিঁড়ে ফেলে তিনি হাসপাতাল ত্যাগ করেন। শুধু তিনি নন, হাসপাতাল চত্বরে সাংবাদিকদের দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন আরও অনেক নিম্নবিত্ত সেবাগ্রহীতা। একের পর এক ভোগান্তির কথা জানান তাঁরা।
আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। এ সময় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেডিওলজি, প্যাথলজি, ব্লাড কর্নার, ফার্মেসিসহ বেশ কিছু বিভাগ বন্ধ পাওয়া যায়। অনেক রোগী ও তাঁদের স্বজনকে লম্বা সময় অপেক্ষা করতে দেখা যায়।
জানা যায়, দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে সারা দেশের মতো ফরিদপুরের দুই হাসপাতালে আজ সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেন টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। কর্মবিরতির সময় চরম ভোগান্তিতে পড়েন সেবাগ্রহীতারা।
ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা নাজমা বেগম নামের এক গৃহকর্মী বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, ওষুধ কিনে খেতে পারি না। আমাদের দাঁড় করিয়ে রেখে কী আন্দোলন? দরকার হলে সরকার হাসপাতাল বন্ধ করে রাখুক, আমাদের হয়রানির মানে কী?’
এদিকে দাবি বাস্তবায়নের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন না এলে বৃহস্পতিবার থেকে পূর্ণাঙ্গ শাটডাউনের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবনের সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারী কর্মীরা।
সমন্বয়কারী টেকনোলজিস্ট শেখ রুহুল আমিন বলেন, ‘গতবারের কর্মবিরতির পর আলোচনায় বসা হলেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। আজকের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না এলে আগামীকাল থেকে কমপ্লিট শাটডাউনে যেতে বাধ্য হব।’