গাঁজার নির্যাস দিয়ে বিশেষ কৌশলে তৈরি করা হতো স্পেশাল কেক, চকলেট, মিল্কশেক ও বিভিন্ন খাবার তৈরির উপকরণ। মাদক সেবীদের কাছে আকর্ষণীয় এই পণ্যগুলো নিরাপদে পৌঁছে দিতে অনলাইনে অর্ডার নেওয়া হতো। আর এই সকল পণ্যের ক্রেতারা সমাজের বিত্তবান ধনী পরিবারের বখে যাওয়া সন্তানেরা। সম্প্রতি বিপুল পরিমাণ পণ্য ও গাঁজাসহ চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এমন তথ্য পেয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগ। যাদের মধ্যে একজন তরুণী ও দুজন যুবক।
পুলিশ জানিয়েছে, গত রোববার বিকেল ৪টার দিকে গুলশান ৬ নম্বর রোড থেকে মোটরসাইকেলে করে এ সকল পণ্য নিয়ে যাওয়ার সময়ে ডেলিভারিম্যানকে আটক করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উত্তরা থেকে চক্রের সঙ্গে জড়িত এক তরুণী ও এক যুবককে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে গাঁজার তৈরি বিভিন্ন খাবারসহ নানা উপকরণ জব্দ করে পুলিশ।
আটকৃতেরা হলেন, রাজধানীর দক্ষিণখান মিয়া পাড়ার জুবায়ের হোসেন (২৪), উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরের অনুভব খান রিবু (২৩) ও উত্তরার সি ব্লকের দুই নম্বরে রোডের বাসিন্দা নাফিজা নাজা (২২)।
তাদের কাছ থেকে ৯০০ গ্রাম গাঁজা, গাঁজার নির্যাস দিয়ে তৈরি ছয় কেজি ১০০ গ্রাম বিভিন্ন খাবার (চকলেট, কেক, মিল্কশেক), খাবার তৈরির বিভিন্ন উপকরণ, একটি প্রো ম্যাক্স-১১ আইফোনসহ দুটি মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত পণ্যের আনুমানিক বাজার মূল্য দুই লাখ ৩৪ হাজার টাকা।
আজ সোমবার দুপুরে গুলশান থানায় সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. আসাদুজ্জামান।
আসাদুজ্জামান বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গুলশান থানা-পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ শাহানুর রহমানের নেতৃত্বে একটি দল গুলশান ৬ ছয় নম্বর রোড এলাকায় অবস্থান নেয়। এ সময় একটি মোটরসাইকেলের পেছনে বসা যুবককে (জুবায়ের) আটক করা হয়।
আটকৃতরা জানিয়েছেন, তারা ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে কানাডিয়ান ও আফ্রিকান মাদক কারবারিদের তৈরি বিভিন্ন ভিডিও দেখে দেশীয় পদ্ধতিতে গাঁজা দিয়ে কেক, চকলেট ও মিল্কশেক তৈরি করে আসছিল। এক কেজি গাঁজার চকলেট তৈরিতে পাঁচ কেজি গাঁজার নির্যাস প্রয়োজন হয় বলেও জানান তারা। তাদের এ সকল পণ্যের গ্রাহক সমাজের অভিযাত পরিবারের সন্তানরা। যারা অনলাইনে তাদের কাছে অর্ডার করলে মোটরসাইকেলে করে পৌঁছে দিতেন চক্রের সদস্যরা।
চক্রটি গ্রুপের নাম পরিবর্তনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়াতে নানা কৌশল ব্যবহার করত। আটকদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। মামলার পর তাদের আদালতে নিয়ে রিমান্ড আবেদন করা হবে বলেও জানান গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান।