বছরে রোগীপ্রতি ৯ ডলার খরচে দেশে উচ্চরক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত নতুন এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
আজ বুধবার হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে ‘বাংলাদেশ হাইপারটেনশন কন্ট্রোল ইনিশিয়েটিভস’ শীর্ষক মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (এনসিডিসি) প্রোগ্রাম, প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান), ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ, গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই) ও রিজলভ টু সেভ লাইভস।
বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্যবিষয়ক অলাভজনক সংস্থা রিজলভ টু সেভ লাইভসের সহযোগিতায় ২০১৮ সাল থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনসিডিসি) ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ (এনএইচএফবি) যৌথভাবে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, যার উদ্দেশ্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে উচ্চরক্তচাপ শনাক্ত করা, চিকিৎসা প্রদান এবং ফলোআপ কার্যক্রম শক্তিশালী করা। অত্যন্ত সফল এই প্রাথমিক প্রকল্প আরও সম্প্রসারণ করা হলে দেশে স্বল্প খরচেই হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, কিডনি বিকল হওয়ার মতো ব্যয়বহুল রোগ প্রতিরোধের মাধ্যমে অসংখ্য জীবন বাঁচানো যাবে।
সাধারণ ওষুধের মাধ্যমে উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হলেও বাংলাদেশে উচ্চরক্তচাপে আক্রান্ত প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষের মধ্যে মাত্র ৪৯ শতাংশের উচ্চরক্তচাপ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে, মাত্র ৩৫ শতাংশ চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করছেন এবং ১৪ শতাংশ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এনসিডিসি ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের যৌথ পরিচালনায় উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি এরই মধ্যে দেশের ৫১টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সফলভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হার্টস টেকনিক্যাল প্যাকেজের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রোগীদের উচ্চরক্তচাপ সেবা প্রদান করা হচ্ছে। কর্মসূচির আওতায় চিকিৎসার জন্য এ পর্যন্ত নিবন্ধিত ১ লাখ রোগীর মধ্যে ৫৮ শতাংশই উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছেন।
উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির বার্ষিক বাস্তবায়ন খরচ নির্ণয়ে ব্যবহৃত হার্টস কস্টিং টুল নামের একটি অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে এই গবেষণায় সুপারিশ করা হয়েছে যে ডাক্তার এবং এই সেবার সঙ্গে জড়িত অন্যদের মধ্যে দায়িত্ব ভাগাভাগি (টাস্ক-শেয়ারিং) নিশ্চিত করা, টাস্ক-শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে পুরো প্রক্রিয়ায় স্থানীয় কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মীদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করা, এবং গুণগত মান ঠিক রেখে প্রতি ইউনিট ওষুধের দাম আরও কমিয়ে আনা গেলে হার্টস প্যাকেজ বাস্তবায়ন আরও বেশি সাশ্রয়ী হবে।