রাজধানীর উত্তরায় ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য মো. খসরু চৌধুরীর নেতৃত্বে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। মিছিল শেষে খিচুড়ি খাওয়াকে কেন্দ্র করে নিজেদের মধ্যেই মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। এতে চারজন আহত হন।
আজ বুধবার দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে এ ঘটনাটি ঘটে।
উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মজিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, খিচুড়ি নিয়ে এমপি সাহেবের লোকজন নিজেদের মধ্যে হাতাহাতি করেছেন। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে শোনা গেছে। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
মিছিলে অংশ নেওয়া উত্তরখান থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মিলন বলেন, ‘আমরা মিছিল শেষে চলে এসেছিলাম। ৩ হাজার লোকের খিচুড়ির আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে ১ হাজার লোক ছিল। কিন্তু কী কারণে তাঁরা মারামারি করেছে, সেটা আমার জানা নেই।’
সংসদ সদস্য খসরু চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এমপি মহোদয় মিছিল শেষে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু মারামারির বিষয়ে কিছু জানা নেই।’
মারামারির বিষয়ে জানতে মো. খসরু চৌধুরীকে একাধিকবার ফোন ও খুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
দুপুর থেকেই উত্তরার জসিমউদ্দীনের হলি ল্যাব এলাকায় খসরু চৌধুরীর নেতৃত্বে মিছিলে যোগ দেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। মিছিলটি উত্তরার রাজলক্ষ্মী হয়ে জসিমউদ্দীন এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। এরপর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা খিচুড়ি খাওয়াকে কেন্দ্র করে হলি ল্যাব এলাকায় বেলা সোয়া ২টার দিকে মারামারিতে জড়িয়ে পড়লে চারজন আহত হন। তাঁদের দুজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। তবে আহতদের নাম–ঠিকানা জানা সম্ভব হয়নি।
মারামারির পূর্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মো. খসরু চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বিএনপি–জামায়াতকে কোনোভাবেই রাজপথে থাকতে দেব না। বিএনপি-জামায়াত ছাত্রদের আন্দোলনকে পুঁজি করে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।’
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ করে সংসদ সদস্য বলেন, ‘আমার-আপনার সন্তানেরাই এই এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে। তাই আমাদের সন্তানদেরকে কোনোভাবেই রাস্তায় নামতে দেওয়া যাবে না।’
খসরু চৌধুরী আরও বলেন, ‘আমরা বিএনপি-জামায়াত রাজপথে দাঁড়িয়ে স্লোগান দেবে সেটা হবে না। আমরা সেটা করতে দেব না।’
এ সময় উপস্থিত নেতা-কর্মীদের খিচুড়ি খাওয়ার দাওয়াত দিয়ে সংসদ সদস্য খসরু বলেন, ‘আমরা আপনাদের জন্য খিচুড়ির ব্যবস্থা করেছি। মিছিল শেষে আপনারা খিচুড়ি না খেয়ে যাবেন না।’
আহতদের বিষয়ে জানতে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গেলে সেখানে কর্তব্যরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নারী চিকিৎসক বলেন, ‘রক্তাক্ত অবস্থায় যখন কয়েকজন চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন, তখন আমি ডিউটিতে ছিলাম না। তাই তাঁদের বিষয়ে কোনো তথ্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া দিতে পারব না।’
পবিত্র আশুরার সরকারি বন্ধ থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি।