করোনার কারণে দীর্ঘ দেড় বছর পর গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের সব স্কুল-কলেজে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হলেও মাদারীপুরের শিবচরের ৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখনো পাঠদান শুরু হয়নি। বন্যা পরিস্থিতির কারণে চর এলাকার বাকি ১৮টি বিদ্যালয়ে পাঠদান শুরু হলেও এই বিদ্যালয়গুলো এখনো পাঠদান শুরু করতে পারেনি।
জানা গেছে, এবারের বন্যায় পদ্মা নদী বেষ্টিত শিবচরের চরজানাজাত, মাদবরেরচর, বন্দরখোলা, কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের চরাঞ্চল পানিতে ডুবে গেছে। ফলে এসব এলাকার মোট ২৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। গত রোববার প্রথম ক্লাস শুরু হওয়ার পর পানি কমতে শুরু করলে ধাপে ধাপে ১৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হলেও ৮টি প্রতিষ্ঠানে চলাচলের রাস্তা পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এখনো পাঠদান শুরু করা যায়নি।
শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে শিবচরের পদ্মা নদীর চরাঞ্চলের ৪ ইউনিয়নের ৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ও বারান্দা পানি ও কাঁদায় ডুবে আছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসার রাস্তা-ঘাট তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে বন্দরখোলা ইউনিয়নের কাজির সুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রাজারচর পল্লি মঙ্গল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরজানাজাত ইউনিয়নের উত্তর চরজানাজাত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নারিকেল বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব খাস বন্দরখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মজিদ সরকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের কাঁঠালবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাগুরখন্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে দুটোতে পানি এবং বাকিগুলো কাঁদায় নিমজ্জিত থাকায় শিক্ষা কার্যক্রম এখনো শুরু করা যায়নি। এ ছাড়া আরও ১৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালু হলেও বন্যার পানির কারণে রাস্তাঘাট ভেঙে যাওয়া ও বিভিন্ন রাস্তা খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না।
মাদবরচর ইউনিয়নের পুরান কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক লতা খাতুন বলেন, বন্যার কারণে রাস্তাঘাট ও মাঠ তলিয়ে যাওয়ায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়া করতে কষ্ট হয়। এ কারণেই শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম হচ্ছে।
শিবচর প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, এখনো চরের ৮ বিদ্যালয়ে পাঠদান শুরু করা যায়নি। পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের বিকল্প উপায়ে পাঠদানের চেষ্টা চলছে।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বন্যায় চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খুব দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট ও বিদ্যালয় মেরামত করা হবে।