বর্ষা প্রকৃতিতে আনে স্নিগ্ধতা। কখনো মেঘ, কখনো বৃষ্টি। শুকনো ডোবা-নালা, খালের নতুন পানিতে তারুণ্যের গান গায় হলদে ব্যাঙের দল। গাছপালায় আসে সজীবতা। গাছে গাছে আসে নতুন ফুল। বর্ষায় ফুলের গাছে আসা বাহারি রঙের ফুলে রঙিন হয়ে উঠেছে পদ্মাসেতুর এক্সপ্রেসওয়ে।
শরিয়তপুরের জাজিরা পয়েন্ট থেকে শুরু করে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত পথের বেশির ভাগ জায়গাজুড়ে সড়কের আইল্যান্ডে ফুটতে শুরু করেছে বাহারি রঙের ফুল। ফোর-লেনের সড়কের মাঝে বাতাসে দুলতে থাকা ফুলগাছের রঙিন ফুল বাড়তি সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে সড়কে। তাতে মুগ্ধ হচ্ছেন মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী যাত্রীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শিবচরের পাঁচ্চর থেকে পদ্মাসেতুর টোলপ্লাজা সংলগ্ন এলাকা এবং ভাঙ্গা উপজেলার পুলিয়া সংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ের আইল্যান্ডে লাগানো নানা প্রজাতির ফুলগাছে ফুটতে শুরু করেছে নানা রঙের ফুল। সাদা, আসমানি, হলুদ, গোলাপি, লাল রঙের নানা প্রজাতির ফুল ফুটেছে। মহাসড়কের এই দীর্ঘপথের মাঝ বরাবর ফুলগাছগুলো বাড়তি সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে।
মো. শাহাদাত হোসেন নামের এক যুবক বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে মহাসড়কের এই ফুলগাছে ফুল ফোটে। দুপাশে প্রশস্ত সড়ক। মাঝখান দিয়ে দীর্ঘপথ ফুলগাছে সাজানো। লাল-নীল-সাদা রঙের ফুল ফুটেছে তাতে। দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। এক্সপ্রেসওয়েটি এমনিতেই চমৎকার। ঝকঝকে, প্রশস্ত আর দীর্ঘ। তার মাঝখান জুড়ে আবার বাহারি ফুলের গাছ। সড়কে পরিবহন যাওয়া-আসার সময় বাতাসে দোল খেতে থাকে গাছগুলো। বেশ ভালো লাগে দেখতে।’
শিবচরের দত্তপাড়া ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সামনে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন মসজিদ। এই মসজিদের সামনেই এক্সপ্রেসওয়ে। প্রতিদিন শত শত মানুষ এই মসজিদের সৌন্দর্য দেখতে আসে। দূর-দুরান্ত থেকে আসা মানুষের ভিড় বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত দেখা যায় এখানে। এক্সপ্রেসওয়ের ফুলগাছের সৌন্দর্য মুগ্ধ করছে এখানকার দর্শনার্থীদের। দর্শনার্থীরা জানান, বর্ষার সময় মহাসড়কের আইল্যান্ডে লাগানো ফুল গাছে ফুল ফোটে। সবুজের সমারোহের মাঝে নানা রঙের ফুল বিমোহিত করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পদ্মাসেতুর জাজিরা পয়েন্টের টোলপ্লাজা থেকে শুরু করে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা পর্যন্ত সড়কের আইল্যান্ডে বিভিন্ন ধরনের গাছ লাগানো হয়েছে। এরিক পাম্প, উইপিং দেবদারু, পাতাবাহার, মশন্ডা, সোনালু, বোতলব্রাশ, রঙ্গনসহ প্রায় ৬ হাজার প্রজাতির গাছ লাগানো হয়েছে। এ ছাড়াও মহাসড়কের ঢাল ও মধ্যবর্তী সমতল জায়গায় লাগানো হয়েছে আম, জাম, কৃষ্ণচূড়া, বকুল, কাঞ্চন, সোনালু, মহুয়া, বহেরা, অর্জুন, পলাশ, শিমুলসহ প্রায় ৮৩ হাজার ফলদ ও ঔষধি গাছ। এখানকার গাছগুলোতে বর্ষা এবং শীতের শুরুতে নানা ধরনের ফুল ফোটে।
আবু বকর সিদ্দিক আরও বলেন, ৩০ কিলোমিটার এই সড়কের মাঝখানের জায়গায় যত ফুল গাছ রয়েছে তা সেনাবাহিনী লাগিয়েছে। এই ফুলগাছের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব তাঁদের। বর্ষা ও শীত মৌসুমে নানা প্রজাতির ফুল গাছে ফুল ফোটে। এখন বর্ষাতেও পুরো সড়কজুড়ে ফুল ফুটেছে। যা সত্যিকার অর্থেই ভিন্নরকম শোভা ছড়াচ্ছে মহাসড়কে। এ ছাড়া সড়কের দুপাশে গাছগুলোও বেশ বড়সড় হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে মহাসড়কে এই গাছ সড়কের সৌন্দর্যকে বিকশিত করেছে। এক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দিয়েছে।