হোম > সারা দেশ > ঢাকা

আন্দোলন করেই হলে উঠলেন ছাত্রীরা, অপর্যাপ্ত সুবিধার অভিযোগ

জাবি প্রতিনিধি

প্রশাসনের দেওয়া প্রতিশ্রুতি কয়েকবার ব্যর্থ হওয়ার পর আন্দোলন করেই নবনির্মিত আবাসিক হলে উঠেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজিলাতুন নেছা হলের ছাত্রীরা। আজ শনিবার সকালে নবনির্মিত ১৮ নম্বর হলে আসন বরাদ্দের পর হলে উঠছেন শিক্ষার্থীরা। যদিও নতুন এই হলটিতে নেই খাবারসহ আনুষঙ্গিক সুবিধা। অথচ প্রায় দুই বছর ধরে হল উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা করাসহ মানসম্মত ব্যবস্থাপনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল প্রশাসন। 

এর আগে গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে নতুন হলে আসন বরাদ্দসহ চার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন ফজিলাতুন নেছা হলের ছাত্রীরা। পরে বিক্ষুব্ধরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। প্রায় চার ঘণ্টা পর আজ ভোর ৫টায় উপাচার্যের আশ্বাসে হলে ফিরে যান ছাত্রীরা। 

আন্দোলনকারী ছাত্রীদের দাবির মধ্যে রয়েছে—আসন বরাদ্দের জন্য লটারি করা, শনিবারের মধ্যে সবার আসন বরাদ্দের বিষয়টি নিশ্চিত করা, হলে কোনো রাজনৈতিক ব্লক না রাখা ও নবনির্মিত হলের নাম ফজিলাতুন নেছা করা। 

বিক্ষুব্ধ ছাত্রীরা জানান, ফজিলাতুন নেছা হলে বিগত কয়েক বছর ধরে ছাত্রীদের তীব্র আসন সংকট। কিন্তু প্রশাসন সংকট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। একাধিকবার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আশ্বাস দেওয়া হলেও সমাধান করেনি হল প্রশাসন। এ কারণে তাঁরা অর্ধশতাধিক ছাত্রী চার দাবিতে গতকাল দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে হলের সামনে জড়ো হন। 

এ সময় ঘটনাস্থলে ফজিলাতুন নেছা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ টি এম আতিকুর রহমান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান উপস্থিত হন। তাঁরা শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলেও শিক্ষার্থীরা তাঁদের অবস্থান অব্যাহত রাখেন। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম শিক্ষার্থীদের আজকের মধ্যে আসন সংকট নিরসনের আশ্বাস দিলে ভোর ৫টার দিকে ছাত্রীরা হলে ফিরে যান। 

ফজিলাতুন নেছা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ টি এম আতিকুর রহমান বলেন, ‘নবনির্মিত হলে ছাত্রীদের আসন বরাদ্দের বিষয়টি আগেই চূড়ান্ত করা হয়েছিল। অনেক আগেই ফজিলাতুন নেছা হলটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে এ হলেই ছাত্রীদের রাখতে হয়েছিল।’ 

এদিকে নতুন হলে উঠলেও অপর্যাপ্ত সুবিধার কথা জানিয়েছেন একাধিক ছাত্রী। সরকার ও রাজনীতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রিমু নওরীন বলেন, ‘দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে নতুন হলে উঠেছি। তবে এখানে শুধু বিদ্যুৎ সুবিধা ও একটি চৌকি রয়েছে। খাবারের জন্য ডাইনিং-ক্যানটিন কিছুই নেই। চেয়ার, টেবিল ও ইন্টারনেট সুবিধাও নেই। এ ছাড়া চলাচলের জন্য মাত্র একটি লিফট চালু রয়েছে। আশা করছি, দ্রুতই প্রশাসন এসব অসুবিধা দূর করে আমাদের কষ্ট লাঘব করবে।’

রিমু নওরীন আরও বলেন, ‘প্রত্যেক তলায় গ্যাসের চুলা থাকার কথা থাকলেও, সেটি নেই। এ ছাড়া প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য একটি করে উন্নতমানের চেয়ার, সেল্ফসহ টেবিল ও লকার থাকার কথা। পাশাপাশি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগও দেওয়া হয়নি। কমনরুম, ব্যায়ামাগার এবং গ্রন্থাগারও প্রস্তুত হয়নি।’ 

এ বিষয়ে ১৮ নম্বর হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘লটারিতে আসন বরাদ্দ করে শনিবারের মধ্যেই হলে প্রায় ৯০০ ছাত্রী উঠেছে। বাদবাকিরা হয়তো আজ-কালেই উঠে যাবে। তাদের নিরাপত্তাসহ অন্যান্য সেবার জন্য বিভিন্ন আবাসিক হলের প্রায় ৪০ জন কর্মচারী রোববারের মধ্যেই কাজে যোগদান করবেন। পাশাপাশি হলের ওয়ার্ডের, টিউটর, সুপারসহ অন্যান্য জনশক্তি শিগগিরই পাওয়া যাবে। আপাতত গ্যাস সংযোগ না থাকায় খাবারে অসুবিধা হলেও মেনে নিতে হবে। আশা করছি ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।’ 

অন্যদিকে ২০১৮ সালে নির্মাণকাজ উদ্বোধনের সময় ২০২০ সালের ডিসেম্বরে হল চালু হবে বলে জানিয়েছিলেন তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। পরে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের কারণে নির্মাণকাজ ব্যাহত হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। 

কাজ পুনরায় আরম্ভ হলে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে হলের নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছিল প্রকল্প অফিস। তখন ৪৯ ও ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নতুন হলে ওঠানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। নবীন শিক্ষার্থীদের নবনির্মিত হলে আসন দেওয়ার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণরুম বিলুপ্ত হবে বলেও আশ্বাস এসেছিল। 

তবে এই আশ্বাসের বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ২০২২ সালের ৯ মার্চ ৫০তম ব্যাচের ক্লাস শুরু করা হয়েছিল অনলাইনে। তবে হলের কাজ শেষ না হওয়ায় ওই বছরের ২৩ মে গণরুমে তুলেই তাঁদের সশরীরে ক্লাস শুরু করা হয়। 

এরপর জানতে চাইলে উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন গেল বছরের জুনের মধ্যেই নির্মাণকাজ শেষে হলে শিক্ষার্থী ওঠানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন। পরে জুন মাসে এসে সে বছরের অক্টোবরে ছয়টি হল উদ্বোধন করা যাবে বলে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছিলেন। কাজ শেষ করতে না পারায় ছয়টি হলের মধ্যে দুটি হল নভেম্বরের মধ্যে উদ্বোধন করতে পারবেন বলে জানান উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম। 

এদিকে হল উদ্বোধন করতে না পারায় এরই মধ্যে কয়েক দফায় নতুন শিক্ষাবর্ষের (৫১তম ব্যাচ) ক্লাস শুরুর সময়সূচি পিছিয়েছে। ৩১ জানুয়ারি শুরু হতে যাওয়া ৫১তম ব্যাচের ক্লাস শুরুর আগেই ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটি করে হল চালুর ঘোষণা বাস্তবায়ন করছে প্রশাসন। তারই অংশ হিসেবে আজ ছাত্রীদের নতুন হলটিতে শিক্ষার্থী ওঠানো হয়েছে। 

সার্বিক বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক নাসির উদ্দিন বলেন, ‘হলের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আমরা দ্রুতই আলোচনায় বসব। অসুবিধা দূর করতে যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, সেগুলো শিগগিরই বাস্তবায়ন হবে। লিফট হয়তো ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই পুরোদমে চলবে। চেয়ার-টেবিলের জন্য আমাদের নতুন করে টেন্ডার দিতে হবে। প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শিক্ষার্থীরা পাঁচ মাসের মধ্যে চেয়ার, টেবিল ও লকার পাবে বলে আশা করছি।’

হারিয়ে যাওয়া কনাই নদ উদ্ধার উদ্‌যাপন

স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি সম্মিলিত নারী প্রয়াসের

শাহবাগে ইনকিলাব মঞ্চের অবরোধ থেকে ‘খেলনা পিস্তলসহ’ যুবক আটক

হাদি হত্যা মামলার প্রধান আসামি ফয়সালের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা

হাদি হত্যাকাণ্ড: ফয়সালকে পালাতে সহায়তার অভিযোগে গ্রেপ্তার রাজুর স্বীকারোক্তি

সুপারিশের তিন মাস পেরোলেও যোগদান হয়নি ৩৫০০ চিকিৎসকের

শাহবাগে আবারও ইনকিলাব মঞ্চের অবরোধ

হাজারীবাগে ‘ককটেল’ বিস্ফোরণ, পুলিশ বলছে পটকা

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

মাকে দেখতে মাঝরাতে হাসপাতালে তারেক রহমান