হোম > সারা দেশ > মানিকগঞ্জ

মানিকগঞ্জ জেলা আ. লীগের সম্মেলন ঘিরে নেতা-কর্মীদের মাঝে সাজ সাজ রব

মঞ্জুর রহমান, মানিকগঞ্জ

মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন দীর্ঘ ছয় বছর পর আগামী ১১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কাঙ্ক্ষিত সম্মেলনকে ঘিরে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেত্রীবৃন্দসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীদের মাঝে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। জেলা শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে বেউথা, শহীদ রফিক সড়কসহ সাতটি উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দুটি পদে অংশগ্রহণকারীদের ছবিসংবলিত অর্ধশতাধিক গেট ও শত শত ব্যানার ফেস্টুনে ভরে গেছে। এ ছাড়া কাঙ্ক্ষিত পদ পেতে একটু সময় পেলেই লবিং এর জন্য ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে ছুটে যাচ্ছেন জেলার সিনিয়র ও মধ্যম সারির নেতারা।

দলীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দলীয় গঠনতন্ত্র অনুসারে তিন বছর পর পর সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও নানা কারণে চার বছর পার হলেও করা হয়নি। অবশেষে জাতীয় নির্বাচনের এক বছর আগেই মানিকগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় মাঠে সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উদ্বোধক হিসেবে থাকবেন প্রেসিডিয়াম সদস্য ফারুক খান, প্রধান বক্তা মির্জা আজম ও বিশেষ অতিথি হিসেবে ডা. দীপু মনি উপস্থিত থাকবেন।

জেলা সম্মেলন সফল করতে ইতিমধ্যে জেলার ৬৫টি ইউনিয়নের সম্মেলন শেষ হয়েছে। সাতটি উপজেলার মধ্যে মানিকগঞ্জ সদর, মানিকগঞ্জ পৌরসভা ও শিবালয় উপজেলা ছাড়া পাঁচটি উপজেলা (সিঙ্গাইর-হরিরামপুর-ঘিওর-দৌলতপুর-সাটুরিয়া) কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে সম্মেলন করা হয়েছে। এই পাঁচটি উপজেলার মধ্যে তিনটি উপজেলা (হরিরামপুর-সাটুরিয়া-দৌলতপুর) স্থানীয় সংসদ সদস্যদের কাছের মানুষ হওয়ায় ভোট ছাড়াই পূর্বের কমিটি বহাল রেখেছেন। দুটি উপজেলা (সিঙ্গাইর ও ঘিওর) একজন সভাপতি আরেকজন সাধারণ সম্পাদক পদে ভোট না দিয়ে নতুন সদস্য মনোনীত করা হয়েছে। আগামী ২ ডিসেম্বর শিবালয় উপজেলা এবং ৭ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জ সদর ও মানিকগঞ্জ পৌরসভার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এই তিনটিতে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের কাছের মানুষদের ভোট ছাড়াই মনোনীত করা হবে বলে গুঞ্জন রয়েছে।

এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একাদিক প্রার্থী অংশগ্রহণ করবে বলে লোকমুখে শোনা যাচ্ছে। ইতিমধ্যে জেলা শহরসহ সাতটি উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীদের ছবিসংবলিত অর্ধশতাধিক গেট ও শত শত ব্যানার ফেস্টুন শোভা পাচ্ছে।

সম্মেলনের অংশগ্রহণকারী সভাপতি পদে প্রার্থীরা হলেন গত সম্মেলনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বী বিজয়ী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম মহীউদ্দিন, সহসভাপতি ও সাটুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ।

এছাড়া সম্মেলনের সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থীরা হলেন, জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও জেলা জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌরসভার মেয়র গাজি কামরুল হুদা সেলিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাদরুল ইসলাম খান বাবলু, যুগ্ম সম্পাদক কাজী এনায়েত হোসেন টিপু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল, তায়েবুর রহমান টিপু, সাংগঠনিক সম্পাদক সুদেব কুমার সাহা এবং শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক তাবারাকুল তোসাদ্দেক হোসেন খান টিটু প্রমুখ।

জেলা শহরে সরেজমিনে ঘুরে এবং সাতটি উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্মেলনের জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রায় এক ডজন প্রার্থী থাকলেও ব্যানার ফেস্টুন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি প্রচারণায় এগিয়ে আছেন সুলতানুল আজম খান আপেল ও সুদেব কুমার সাহা। জেলা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবি দিয়ে এই দুজনের ছবি সংবলিত প্রায় অর্ধ শতাধিক গেট ও ব্যানার ফেস্টুনে ভরে গেছে। এ ছাড়া দলের মধ্যেম সারির নেতারা সম্মেলন সফল করতে বড় বড় ব্যানার ফেস্টুন লাগিয়েছেন।

নাম পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের তৃণমূলের বেশ কয়েকজন ভোটার আজকের পত্রিকাকে জানান, সম্মেলনের আয়োজন করে সিলেকশনের মাধ্যমে নেতা বানিয়ে গেলে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন হয় না। তিন বছরে একবার তৃণমূলের কর্মীদের খোঁজ খবর রাখেন না। নিজ দলের সাংগঠনিক কোনো কাজে তাদের কাছে গেলে দেখা পাওয়া যায় না। সিলেকশনে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ায় দলীয় কোন্দলের জর্জরিত থাকে সংগঠন। আর যদি ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত হয় তাহলেই তৃণমূলের মূল্যায়ন বাড়বে। সংগঠন শক্তিশালী হবে।

সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সুলতান আজম খান আপেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, আমি জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ জেলা আওয়ামী লীগের ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময়ে হামলা-মামলা সহ্য করে দলের জন্য নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করেছি। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূলের নেতা–কর্মীদের ভোটের মাধ্যমে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলে সংগঠন শক্তিশালী হবে। পাশাপাশি দলের জন্য কাজ করা যোগ্যদের মূল্যায়ন হবে। তবে আমরা যে যাই বলি দলের নেত্রী যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেই সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া হবে। আরেক প্রার্থী সুদেব কুমার সাহার সম্মেলন নিয়ে বক্তব্য জানতে তার মুঠো ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেনি।

জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক এহতেশাম হোসেন খান ভুনু আজকের পত্রিকাকে বলেন, দুটি উপজেলা ও একটি পৌরসভা ছাড়া সব উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের সম্মেলন শেষ হয়েছে। আগামী ৭ ডিসেম্বরের মধ্যেই বাকিগুলো সম্মেলন শেষ হবে। সম্মেলন সফল করতে এখন স্টেজ তৈরির কাজ চলছে। আগামী ১১ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে সম্মেলন সফলভাবে সম্পূর্ণ হবে।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহীউদ্দিন বলেন, ‘১৯৮৪,১৯৯২ ও ১৯৯৬ সালের সম্মেলনে আমি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হই। এরপর ২০০৩ সালের সম্মেলনের ভোটে আমি সভাপতি নির্বাচিত হই। আমার কার্যক্রমে খুশি হয়ে ২০১৫ সালের সম্মেলনে নেত্রী আমাকে বিনা ভোটে সভাপতি নির্বাচিত করেন। এবারের সম্মেলনে আমাদের নেত্রীর সিদ্ধান্ত হবে আমার সিদ্ধান্ত। আমার দলের জন্য আমার নেত্রী যে সিদ্ধান্ত দেবেন আমি বা আমরা তার সিদ্ধান্ত মাথা পেতে নিব। নেত্রীর যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটাই মেনে নেবেন আরেক প্রার্থী আব্দুস সালাম।’ 

শহীদ জিয়ার কবরের পূর্ব পাশে খোঁড়া হচ্ছে নতুন কবর

খালেদা জিয়ার জানাজা: যেসব পথে নিয়ন্ত্রিত থাকবে যান চলাচল

রাষ্ট্রীয় শোক: ঢাকায় ৩ দিন আতশবাজি, পটকা ফোটানো নিষিদ্ধ

খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে বাড়ানো হলো মেট্রোরেলের ট্রিপ

হাদি হত্যা মামলা: সিবিউন-সঞ্জয়ের তৃতীয় দফায় রিমান্ড, ফয়সাল নামে আরও একজন রিমান্ডে

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাবিতে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের কালো ব্যাজ ধারণ

রাজধানীর রামপুরায় অটোরিকশার ধাক্কায় বৃদ্ধের মৃত্যু

গয়েশ্বর চন্দ্রের আসনে বিএনপির বিদ্রোহী তিন বড় নেতাসহ ১৬ প্রার্থী, শক্ত লড়াইয়ের আভাস

খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর শুনে এভারকেয়ারের সামনে ভিড়, পুলিশের ব্যারিকেড

হারিয়ে যাওয়া কনাই নদ উদ্ধার উদ্‌যাপন