ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজতখানার পাশে একটি সাইনবোর্ডে লেখা ‘সংরক্ষিত এলাকা’। ওই সাইনবোর্ডের সামনে দাঁড়ানো বৃদ্ধ আনেছা বেগম। এসেছেন রাজধানীর খিলগাঁও থেকে।
কেন এসেছেন, জিজ্ঞেস করতেই ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে বললেন, ছেলেকে দেখার জন্য। তিনি জানান, ছেলের নাম বাবু ইমরান। খিলগাঁওয়ের একটি নাশকতার মামলায় তাঁকে গতকাল রোববার আটক করে পুলিশ। আজ আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
আনেছা বেগম বলেন, ‘শুনছি, রাজনৈতিক কেসে আমার পোলারে চালান দিছে। আমরা কি রাজনীতি করি? আমার পোলা অটো (অটোরিকশা) চালায়। সে কোনো ভাঙচুর করে নাই। কাল চায়ের দোকানে বসা ছিল। তারে ধইরা নিয়া গেছে।’
আনেছা বেগমের হাতে এক লিটারের একটি পানির বোতল। শুধু পানি খেয়ে দিন পার করছেন বলে জানান। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘কাল থেইকা খাওন দাওন নাই। আজ (সোমবার) সকাল ১০টায় কোটে (কোর্টে) আইসা দাঁড়াইয়া আছি পোলারে একনজর দেখার জন্য। কিন্তু দেহা অয় নাই। উকিলে কইছে দেহা অবে না। জামিনও অবে না।’
আনেছা বেগম জানান, তিনি অন্যের বাসায় কাজ করেন। ছেলে অটোরিকশা চালান। তাঁর সংসারে আরও সদস্য রয়েছে। দুজনের কষ্টের রোজগারে সংসার চলে। এখন কী হবে! সংসার কীভাবে চলবে! কত দিন পর ছেলে মুক্তি পাবে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন এই বৃদ্ধা। তিনি জানান, তাঁর বয়স ৭০ বছর। আক্ষেপ করে বলেন, ‘এই বয়সে আদালতে ঘুরতে হবে। এটাই কপালে ছিল!’