‘ভিআইপি বন্দীরা কারাগারে গেলেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁরা চিকিৎসার জন্য বিএসএমএমইউর প্রিজন সেলে যান। প্রিজন সেল যেন রিসোর্টে পরিণত হয়েছে। এই চর্চা বন্ধ করতে হবে।’ সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদের চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠনের আবেদনের শুনানিতে বুধবার এসব কথা বলেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চে এই শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত চার বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ডেসটিনির প্রেসিডেন্ট ও সাবেক সেনাপ্রধানের স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন চান। মেডিকেল বোর্ড গঠন করে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই প্রতিবেদন দিতে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
আদালতে হারুন-অর-রশিদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রবিউল আলম বুদু। এ ছাড়া রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় ডেসটিনি গ্রুপের এমডি রফিকুল আমীনসহ ৪৬ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়ে গত ১২ মে রায় দেন বিচারিক আদালত। একই সঙ্গে আসামিদের ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়।
রায়ে রফিকুল আমীনের ১২ বছর কারাদণ্ড ও ২০০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড, চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনের ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং প্রেসিডেন্ট এম হারুন-অর-রশিদের চার বছরের কারাদণ্ড ও ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। বাকি আসামিদের ৫ থেকে ৯ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হারুন-অর-রশিদ। পাশাপাশি জামিনও চান তিনি। ৯ জুন হারুন-অর-রশিদের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন আদালত।
ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি এবং ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন প্রজেক্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই রাজধানীর কলাবাগান থানায় দুটি মামলা করে দুদক। দুই মামলায় মোট ৪ হাজার ১১৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়।
তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ৫ মে দুদক আদালতে উভয় মামলায় অভিযোগপত্র দেয়। এর মধ্যে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মামলায় ৪৬ জন এবং ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডে দুর্নীতির মামলার ১৯ জনকে আসামি করা হয়। হারুন-অর-রশিদ ও রফিকুল আমীন দুই মামলাতেই আসামি।