জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) একটি আবাসিক হলে দুজন কর্মচারী নিয়োগকে কেন্দ্র করে প্রভোস্টের কার্যালয়ে তালা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিট ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগের নেতারা।
আজ বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আল বেরুনী আবাসিক হলের প্রভোস্ট কোয়ার্টারে অধ্যাপক সিকদার মো. জুলকারনাইনকে অবরুদ্ধ করা হয়। পরে, হলের প্রভোস্ট কক্ষে তালা মারেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় চারটি দাবি জানান নেতা–কর্মীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিস জানায়, আজ বেলা আড়াইটার দিকে আল-বেরুনী হলের অফিস সহকারী ও নিরাপত্তাকর্মী পদে নিয়োগ বোর্ড ছিল। কিন্তু অনিবার্য কারণবশত নিয়োগ বোর্ড বাতিল করে কর্তৃপক্ষ।
ছাত্রদের দাবিগুলো হলো প্রভোস্টকে নিয়মিত হলে আসতে হবে, হলের পুকুর পরিষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া, হল কন্সট্রাকশনের অসমাপ্ত কাজ শেষ করা ও হলের সামনের রাস্তার কাজ শেষ করতে হবে।
আবাসিক হল সংশ্লিষ্ট ও ছাত্রলীগের একাধিক নেতা-কর্মী জানান, দুটি নিয়োগের জন্য প্রভোস্ট একটি মোটা অঙ্কের আর্থিক সুবিধা নিয়েছে প্রার্থীদের থেকে। যেখানে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা বঞ্চিত হয়েছে। এ জন্য প্রভোস্টকে নিয়োগ বোর্ডে যেতে দেয়নি ছাত্রলীগ। তাই হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দিয়ে আন্দোলন করানো হয়েছে।
এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ সিকদার মো. জুলকারনাইন বলেন, ‘আজকের ঘটনা খুবই বিব্রতকর। আমার বাসায় ৩০-৪০ জন শিক্ষার্থী গিয়ে এভাবে আমাকে হলে নিয়ে আসবে এটা লজ্জাজনক। আজ দুজন নিয়োগ হওয়ার কথা ছিল। একজন প্রার্থী আগে থেকে অস্থায়ী কর্মচারী হিসেবে কর্মরত। তাঁকে ছাত্রলীগের পছন্দ না, কারণ তাঁরা ওই কর্মচারীকে ডেকেছিল সে দেখা করেনি। ওই পদে ছাত্রলীগের পছন্দের একজনকে নিয়োগ দিতে বলে আমাকে। কিন্তু আমি নিয়োগ দেওয়ার তো কেউ না।’
ছাত্রদের দাবির বিষয়ে সিকদার জুলকারনাইন বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার প্রায় এক বছর হলো। আমি রেগুলার হলে আসার চেষ্টা করেছি। পুকুর পরিষ্কারের বিষয়ে ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে জানাবে। হলের বাকি কাজগুলো নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলেছি। এগুলোও হবে।’
তবে এসব বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও আল-বেরুনী হল ছাত্রলীগ নেতা এনামুল হক এনাম বলেন, ‘নিয়োগ এবং নিয়োগে লেনদেনের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আজ সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর হলের সামনে জটলা দেখি। নিচে এসে জানতে পারি বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রাধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা দিয়েছে। তাঁদের দাবিগুলো দীর্ঘদিনের। প্রাধ্যক্ষ হলের বিষয়ে উদাসীন। উনি হলকে গুরুত্ব দেন না। আজকের তালা দেওয়ার ঘটনায় ছাত্রলীগের কেউ ছিলেন না। যদি কেউ এমন অভিযোগ করেন থাকে তাহলে সেটা মনগড়া।’