সড়কের গর্তে আটকে গেছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা। পেছনে তৈরি হয়েছে যানজট। পেছন থেকে কেউ জোরে হর্ন দিচ্ছে, আবার কেউ করছে গালাগাল। শেষমেশ কয়েকজন মিলে ধাক্কা দিয়ে ওঠাতে হয়েছে রিকশাটিকে। গত রোববার সকালে এমনটাই দেখা যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে হাতিরঝিল যাওয়ার সড়কে। সড়কটি পান্থপথ-তেজগাঁও লিংক রোড নামেও পরিচিত।
সেই অটোরিকশাচালকের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে। রাস্তা ঠিক করার নামে মাঝেমধ্যে শুধু গর্ত ভরাট করে দেওয়া হয়। ভালোমতো ঠিক করলে আর এমন সমস্যা হতো না।
ব্যস্ততম এই সড়কে রিকশা, মোটরবাইক, সিএনজিচালিত রিকশা, প্রাইভেট কার, বাসসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে। এদিকে কারওয়ান বাজারের মাছের পাইকারি আড়ত রয়েছে এই সড়ক ঘেঁষে। আড়তের সামনের অংশ বলা যায় তলিয়ে থাকে আড়তের পানিতে। এ কারণে ওই অংশে পিচ-পাথর উঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা। আর এই গর্তে জমা কাদাপানি মাড়িয়ে চলাচল করতে হয় সবাইকে। কোনো যানবাহন একটু দ্রুত গেলেই কাদাপানি ছিটকে পথচারী কিংবা রিকশাযাত্রীদের ভিজিয়ে দেয়।
জুতায়, প্যান্টে কাদা মাখানো মোটরবাইকচালক অনুপম সাহা বলেন, রাস্তার একদম যাচ্ছেতাই অবস্থা। মাছবাজারের পানি এসে রাস্তা নষ্ট করে দিচ্ছে, এটা দেখার কেউ নেই। বাজারের পানি রাস্তায় আসবে কেন? এ পানি সরানোর ব্যবস্থা রাখা কি উচিত না তাদের?
রেলওয়ে ক্রসিং-সংলগ্ন একটি চা-দোকানের স্বত্বাধিকারী মো. শফিক বলেন, প্রায় দেড় বছর ধরে এই রাস্তার এমন অবস্থা। মূলত এক্সপ্রেসওয়ের কাজের জন্য ভারী যানবাহন চলাচল করায় রাস্তা ভেঙে গেছে। পাশের মাছের আড়তের পানিও জমে থাকে রাস্তায়। গতকালও এক ব্যক্তির ১০ বস্তা চাল পড়ে গেছে।
জ্যামে বসে থাকা রিকশাচালক আবুল কাশেম বলেন, মাঝেমধ্যে রিকশা গর্তে আটকে যায়, টেনে তুলতে হয়। দেখেন না, সামনের পুরা রাস্তা খালি, কিন্তু এদিকে পুরা জ্যাম। বৃষ্টি হলে দুর্ভোগ আরও বাড়ে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন বলেন, ‘ওই স্থানে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে। যারা কাজ করছে, তাদের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে যে কাজ চলাকালীন তারা এটাকে মেইনটেইন করবে এবং তাদের কাজ যখন শেষ হবে, তখন আবার আগের মতো করে এটা আমাদের বুঝিয়ে দেবে। যেসব জায়গায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ হচ্ছে, ওই সব জায়গায় একটু সমস্যা হচ্ছে। তারা কাজ করছে না এবং এটার জন্য জনদুর্ভোগ হচ্ছে। আমরা তাদের আবার একটা রিমাইন্ডার দিয়ে দেব। আর এটা আমাদের জোন ফাইভের আন্ডারে। আমি জোন ফাইভকে বলে দেব, তারা যেন বিষয়টি দেখে।’
মাছের আড়তের পানি সড়কে আসার বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলী বলেন, আড়ত বা বাজারের নিজস্ব পানি নিষ্কাশনব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। মাছবাজারের পানি তো রাস্তায় আসার কথা নয়। আপনি যেহেতু বললেন, আমরা এই বিষয়ে অবশ্যই পদক্ষেপ নেব।’