ডিজে পার্টিতে মোবাইল হারানোর জেরে দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব থেকে সাভারের আকাশকে খুন করা হয়েছে। খুনের সঙ্গে জড়িত প্রধান আসামি হৃদয় গ্রুপের প্রধান হৃদয় হোসেন ওরফে গিয়ার হৃদয়সহ আটজনকে গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য দিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাব।
আজ সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। গত রোববার রাতে সাভারে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
গ্রেপ্তাররা হলেন হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা হৃদয় গ্রুপের প্রধান মো. হৃদয় হোসেন ওরফে গিয়ার হৃদয় (২৪), মো. আরিয়ান আহম্মেদ জয় ওরফে ড্যাগার আরিয়ান (২৩), নাসির উদ্দিন নাসু ওরফে বাবা নাসু (৫২), মো. আবিরুল হক আবির ওরফে কাটা আবির (২৪), জোবায়ের হাসান খন্দকার ওরফে পাইটু জোবায়ের (১৯), মো. জাকির হোসেন রনি (৩০), মো. জাহিদুল ইসলাম ওরফে জাহেদ (৩৬) এবং আমির হামজা (২১)।
র্যাবের কমান্ডার খন্দকার আল মঈন দাবি করেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা আড়াপাড়া এলাকায় একটি বাসায় ডিজে পার্টির আয়োজন করে। ওই অনুষ্ঠানে একটি মোবাইল হারানোর ঘটনাকে কেন্দ্র মোবাইল চুরির অভিযোগে দুই যুবককে মারধর করা হয়। পরবর্তীতে ঘটনার জের ধরে সাভারের একটি খাবার হোটেলের ভেতর ‘হৃদয় গ্রুপ’ ও ‘পিনিক রাব্বি গ্রুপ’ সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় আকাশকে ধারালো দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়।
তিনি আরও দাবি করেছেন, সম্প্রতি সাভার এলাকায় বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে হৃদয় গ্রুপের সদস্যদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। আকাশের পরে এই গ্রুপের সদস্যরা ১২ মার্চ সাভার পৌর এলাকায় সোহেল নামে এক ব্যক্তিকে এবং গত ২১ মার্চ সোবহানবাগ এলাকায় আমজাদ নামে আরেক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাতে খুন করেছেন।
র্যাবের ধারণা, এই গ্রুপের কাছে যে পরিমাণ অস্ত্র মজুত ছিল, তাতে বড় কোনো অপরাধের পরিকল্পনা ছিল তাঁদের।
গ্রেপ্তার হওয়া জাহিদুলের পরামর্শে এবং অর্থনৈতিক লোভে হৃদয় গ্রুপ এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে আসছিল উল্লেখ করে খন্দকার মঈন বলেন, জাহিদুল কষ্টিপাথর ও ধাতব মুদ্রা প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন ব্যক্তিকে ভুয়া পাথরের মূর্তি দেখিয়ে, কষ্টিপাথর বিক্রির কথা বলে, সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে বিভিন্ন জনকে জিম্মি করে তাঁর সর্বস্ব হাতিয়ে নিত। এসব কাজের জন্য এই গ্রুপকে ব্যবহার করতেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে বিভিন্ন থানায় ৬ থেকে ৭টি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে পিনিক রাব্বি গ্রুপের সদস্যদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।