মিসরের ইজিপ্ট এয়ার থেকে দুটি উড়োজাহাজ ভাড়ার প্রক্রিয়ায় ১ হাজার ১৬১ কোটি টাকার দুর্নীতির মামলায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ২১ কর্মকর্তার জামিন আবেদন নিয়ে আবার পিছিয়েছে। আদালত ১০ অক্টোবর শুনানির জন্য নতুন দিন রেখেছেন।
আসামিদের পক্ষে শুনানির জন্য সময় চাইলে আজ রোববার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত ও ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান এ আদেশ দেন।
আদালত বলেছে, ১০ অক্টোবর আসামিদের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি করে আদেশ দেওয়া হবে। ততদিন তারা ‘যেমন অবস্থায় আছেন, তেমনই থাকবেন’।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি সাবেক ফ্লাইট ক্যাপ্টেন (অপারেশন) ইশরাত আহমেদসহ বিমানের সাবেক ও বর্তমান ২৩ জন কর্মকর্তারা বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
৮ ফেব্রুয়ারি ২১ আসামি হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করে আগাম জামিন চান। আদালত জামিন না দিয়ে তাঁদের ৩ সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। এরপর ১৫ মার্চ তাঁরা জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন।
২০১৪ সালে ইজিপ্ট এয়ারের কাছ থেকে ৫ বছরের চুক্তিতে ২টি বোয়িং ৭-২০০ ইআর মডেলের উড়োজাহাজ ইজারা নেয় বিমান। প্রথম বছরের শেষে দুটি উড়োজাহাজেরই ইঞ্জিন বিকল হয়। ইঞ্জিনগুলো ১২-১৫ বছরের পুরোনো ছিল। উড়োজাহাজ সচল রাখার জন্য ইজিপ্ট এয়ারের কাছ থেকে আরেকটি ইঞ্জিন ইজারা নেওয়া হয়। দেড় বছর পর সেটিও নষ্ট হয়ে যায়। এতে ৫ বছরে মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির তদন্তে এসব তথ্য উঠে আসে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি প্রথমে বিষয়টি খতিয়ে দেখে এবং ২টি উড়োজাহাজ ইজারা নেওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়মের খোঁজ পায়। পরে দুদককে বিষয়টি খতিয়ে দেখার সুপারিশ করা হয়। এরপর দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে তদন্ত শুরু করে দুদক। অনুসন্ধান শেষে দুদক এই মামলা করে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রথমে নিজেদের লাভের জন্য এবং পরে জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে ইজিপ্ট এয়ারের ২টি উড়োজাহাজ ইজারা ও পুনরায় সরবরাহ করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের ১ হাজার ১৬১ কোটি টাকা লোকসান করেছেন।