পারিবারিক সহিংসতার অভিযোগে স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় জবাব দিয়েছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার আল আমিন। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে এই জবাব দেন।
জবাবে আল আমিন বলেছেন, স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েদের তিনি নিয়মিত ভরণ-পোষণ দিতেন। তার পরও বিভিন্ন কারণে বনিবনা না হওয়ায় এবং স্ত্রীর বৈবাহিক সম্পর্কে তিক্ততা বৃদ্ধি পাওয়ায় তাঁর সঙ্গে সংসার করা আর সম্ভব নয় বিধায় গত ২৫ আগস্ট তিনি তাঁর স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন।
সকালেই আল আমিন তাঁর আইনজীবীর মাধ্যমে লিখিত জবাব দেন। লিখিত জবাবে তিনি দাবি করেন, যেহেতু স্ত্রী থাকাকালীন মামলার বাদীকে তিনি নিয়মিত ভরণ-পোষণ দিতেন এবং এখন তালাক দেওয়া হয়েছে, সে কারণে তিনি পারিবারিক সহিংসতার এই মামলা থেকে অব্যাহতি পাবেন। জবাবে আল আমিন আরও উল্লেখ করেন, কাবিননামায় উল্লেখিত বকেয়া দেনমোহর এবং ইদ্দতকালীন ভরণ-পোষণ দিতে তিনি প্রস্তুত আছেন।
শুনানির সময় আল আমিনের স্ত্রী ইসরাত জাহান আদালতে দুই সন্তান নিয়ে হাজির হন। তিনি আদালতে বলেন, তিনি তালাকের কোনো নোটিশ পাননি। তালাক সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না।
শুনানি শেষে আদালত পরে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন।
এর আগে এই মামলায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন আল আমিন। একই সঙ্গে জামিনের আবেদন করেন। মামলার বাদী ও আল আমিনের পক্ষের আইনজীবীর শুনানি শেষে আদালত জামিন মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে ৬ অক্টোবর পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করেন আদালত।
আল আমিনের স্ত্রী ইশরাত জাহান গত ৭ সেপ্টেম্বর এই মামলা দায়ের করেন। ওই দিন অভিযোগ আমলে নিয়ে আল আমিনকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ জারি করেন।
২০১০ সালের পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইনের ১৫ (১) (এ) (বি) (সি) / ১৬ (৫) (৬) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলায় প্রতি মাসে ১০ লাখ টাকা ভরণপোষণও দাবি করা হয় এই মামলায়।
মামলায় ইশরাত অভিযোগ করেন, গত কয়েক বছর ধরে তাঁর স্বামী দুই সন্তানের লেখাপড়ার খরচসহ তাঁকে ভরণ-পোষণ দেননি। তিনি আরও জানান, গত ৩ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে আল-আমিনের মা তাঁকে টেলিফোন করে বলেন, তাঁর ছেলে দাম্পত্য জীবন চালিয়ে যাবে না এবং দুই সন্তানের শিক্ষার খরচসহ তাঁর ভরণ-পোষণ দেবেন। তবে এরপর তাঁকে তালাক দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। বিভিন্ন সময়ে আল আমিন স্ত্রীর সঙ্গে সহিংসতার আচরণ করতেন বলে মামলার অভিযোগে বলা হয়।
এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মিরপুর থানায় আল আমিনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের করেছিলেন ইশরাত জাহান। সেখানে তিনি অভিযোগ করেছেন, ২০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে আল-আমিন তাকে নির্যাতন ও লাঞ্ছিত করেছেন। এ ছাড়া আল-আমিন তাঁকে তাঁর সন্তানসহ বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করেছেন বলেও মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
স্ত্রীকে নির্যাতন ও যৌতুকের দাবিতে দায়ের করা মামলায় আল-আমিন আত্মসমর্পণ করার পর হাইকোর্ট তাঁকে আট সপ্তাহের আগাম জামিন মঞ্জুর করেন।