ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত আবুল কালাম চোকদারকে তাঁর মা-বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে।
আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ৯টায় শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার পোরাগাছা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে নড়িয়া পৌর কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়। প্রিয়জনকে শেষবিদায় জানাতে সেখানে উপস্থিত হন স্বজন ও প্রতিবেশীরা।
এর আগে, গতকাল রোববার রাতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের নতুন আইলপাড়া বাইতুল ফালাহ জামে মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর স্বজনেরা তাঁর মরদেহ নিয়ে দেশের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন এবং রাত ২টার দিকে মরদেহ গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছায়।
স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আবুল কালাম আজাদ (৩৬) নড়িয়া উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠি গ্রামের মৃত আব্দুল জলিল চোকদারের ছোট ছেলে। প্রায় ১৫ বছর আগে তাঁর মা-বাবা মারা যান।
আবুল কালাম ছয়-সাত বছর আগে মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরে বিয়ে করেন। তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান—আব্দুল্লাহ (৫) ও সুরাইয়াকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ পাঠানতলী এলাকায় বসবাস করতেন। ঢাকায় একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে তিনি জনশক্তি রপ্তানির কাজ করতেন।
রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে ব্যক্তিগত কাজে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় যাওয়ার সময় মেট্রোরেলের একটি বেয়ারিং প্যাড খুলে সরাসরি আবুল কালামের মাথা পড়ে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
আবুল কালামের মেজো ভাই খোকন চোকদার বলেন, রাত ২টার দিকে ছোট ভাই আবুল কালামের মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। আজ সকাল ৯টায় গ্রামের মসজিদে জানাজা শেষে নড়িয়া পৌর কবরস্থানে মা-বাবার কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়েছে।
মোক্তারের চর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাদশা শেখ বলেন, ‘আবুল কালামের মা-বাবা অনেক আগেই মারা যান। ছেলেটি অনেক কষ্ট করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তার হঠাৎ এভাবে করুণ মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না।’
এ বিষয়ে নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল কাইয়ুম খান বলেন, ‘আবুল কালামের মৃত্যু মর্মান্তিক। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী পরিবারটিকে দ্রুত ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে।’