রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় ১৪ বছরের এক কিশোরীকে নির্যাতনের মামলায় পারভীন চৌধুরী নামের এক গৃহকর্ত্রীকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩-এর বিচারক মো. গোলাম কবীর এ রায় ঘোষণা করেন।
কারাদণ্ডের পাশাপাশি আসামিকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হলে তাঁকে আরও চার মাস বিনাশ্রম কারাভোগ করতে হবে বলে রায়ে বলা হয়েছে।
১৫ বছর আগের ঘটনায় করা এ মামলার রায় ঘোষণার সময় সাজাপ্রাপ্ত পারভীন চৌধুরী ট্রাইব্যুনালে হাজির ছিলেন। তাঁকে সাজা পরোয়ানাসহ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ১৪ বছরের কিশোরী শিরিন শেওড়াপাড়ায় পারভীন চৌধুরীর বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করত। কারণে-অকারণে পারভীন চৌধুরী ও তাঁর মেয়ে ইসমত জাহান জনি তাকে মারধর করতেন। গরম পানির ছ্যাঁকা দিতেন। ঘরে আটকে রাখতেন। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দিতেন না। ২০১০ সালের ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর গৃহকর্মীকে মারধর করে তাকে জখম করেন মা ও মেয়ে। পরে ২৩ অক্টোবর পারভীন চৌধুরী তাকে মারধর করে বাসা থেকে বের করে দেন। বেলা ৩টার দিকে শেওড়াপাড়ায় শিরিনকে কান্নাকাটি করতে দেখেন তার মায়ের পূর্বপরিচিত প্রতিবেশী আব্দুর রশিদ। তিনি শিরিনের শরীরে ক্ষত দেখতে পান। এ ঘটনায় ওই দিনই আব্দুর রশিদ মিরপুর মডেল থানায় পারভীন চৌধুরী ও ইসমত জাহান জনিকে আসামি দিয়ে মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত শেষে পারভীন চৌধুরীকে অভিযুক্ত করে মিরপুর মডেল থানার এসআই আবু বকর মিয়া অভিযোগপত্র জমা দেন। তবে ইসমত জাহান জনির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁকে অব্যাহতির আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। পরে ট্রাইব্যুনাল তাঁকে অব্যাহতি দেন।
এরপর ২০১৫ সালের ১৬ এপ্রিল পারভীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়।
মামলার বিচার চলাকালে ১১ জন সাক্ষীর মধ্যে ছয়জনের সাক্ষ্য নেন ট্রাইব্যুনাল। অন্যদিকে পারভীন চৌধুরী নিজে ও ইসমত জাহান মায়ের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দেন।