সাভারের আশুলিয়ায় ফ্ল্যাট থেকে মুক্তার হোসেন, তার স্ত্রী শাহিদা বেগম ও তাদের ছেলে মেহেদী হাসান জয়ের গলাকাটা লাশ গত শনিবার উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত দুই জনকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
গ্রেপ্তারের খবর শুনে নিহত মুক্তার হোসেন বাবুলের বড় ভাই আইনুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার ভাই ও তার স্ত্রী সন্তানকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। আমরা তো আর কখনো তাঁদের ফিরে পাবো না। হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি হলে তাদের আত্মা কিছুটা শান্তি পাব।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে আজকের পত্রিকাকে আইনুল হক একথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা থেকে পুলিশ ফোন করে জানিয়েছে আমার ভাই ও তার পরিবারকে যারা নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমাদের দাবি হত্যাকারীদের দ্রুত সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। এখন এই একটাই চাওয়া আমাদের।’ এরপর তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত বাবুলের বড় ভাবি জুলেখা বেগম বলেন, ‘খুনিদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে সবোর্চ্চ শাস্তির দাবি জানাই।’
নিহতের বড় বোন খদেজা বলেন, ‘ওরা আমার স্নেহের ছোট ভাইকে হত্যা করে আমাদের শোকের সাগরে ভাসিয়ে দিয়েছে। আমরা এখন আর কিছুই চাই না। শুধু ভাই ও তার পরিবারের হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই আমরা। এতে আমার ভাইয়ের আত্মাও শান্তি পাবে। ওদের সর্বোচ্চ শাস্তি না হলে, এ রকম হত্যাকাণ্ড চলতেই থাকবে।’
কোষারাণীগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘এ জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারকাজ শুরু করে খুনিদের শাস্তির দাবি জানাই।’
নিহত বাবুলের স্কুলজীবনের বন্ধু ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মান্নান বলেন, ‘বাবুল অভাব-অনটনে বড় হয়েছে। তার বাবা স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম ছিলেন। ২০ বছর আগে তিনি মারা যান। ওই সময় বাবুল এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে ঢাকায় চলে যায় কাজের সন্ধানে। সেখানে গার্মেন্টসে কাজ নেয় বলে জানি। তবে ছোটবেলা থেকে সে শান্তশিষ্ট ও মিশুক প্রকৃতির ছিল।’
বাবুলের বড় ভাই ইউসুফ আলী বলেন, ‘২০০৩ সালে সুমি আক্তার নামে এক গার্মেন্টস কর্মীকে বিয়ে করে বাবুল। ২০০৭ সালে ওই ঘরে তাদের এক পুত্রসন্তানের জন্ম হয়।’
জানা গেছে, বাবুল ও শাহিদা পেশায় পোশাকশ্রমিক। তাঁদের ১২ বছরের ছেলে জয় আশুলিয়ার একটি স্কুলে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল। হত্যার শিকার বাবুল ঠাঁকুরগাও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার কোষারাণীগঞ্জ ইউনিয়নের গরুড়া (ফুলবাড়ী) গ্রামের মৃত সইর উদ্দিনের ছেলে। সাত ভাই-বোনের মধ্যে তৃতীয় ছিলেন বাবুল।
আরোও পড়ুন: