পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অপূর্ব পালকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক এ নির্দেশ দেন।
অপূর্ব পালকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। আগেই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই চাঁদমিয়ার করা ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত পাঁচ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালতের ভাটারা থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই জাকির হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
৫ অক্টোবর অপূর্ব পালকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগের দিন মধ্যরাতে রাজধানীর একটি আবাসিক এলাকা থেকে তাঁকে আটক করা হয়।
৪ অক্টোবর সকালে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভেতরে ওই শিক্ষার্থী কোরআন শরিফ অবমাননা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোরআন অবমাননার ভিডিও থেকে দেখা যায়, অপূর্ব পাল একটি কোরআনের খণ্ডবিখণ্ড পাতা পা দিয়ে নাচাচ্ছিলেন। আবার কোরআন শরিফকে লাথি মেরে খেলছিলেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানান। তাঁরা অপূর্বকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যান। প্রশাসন দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়।
এ ঘটনার কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অভিযুক্ত অপূর্ব পাল নিজেও তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ওই ভিডিও প্রকাশ করেন।
পরে মধ্যরাতে উত্তেজিত একদল শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অপূর্বর বাসার নিচে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অপূর্ব পালকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তবে আটকের পর বিক্ষুব্ধ জনতা ও শিক্ষার্থীরা অপূর্বকে মারধর করে। অপূর্বকে থানায় নিয়ে এসে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়।
এ ঘটনায় ভাটারা থানার এসআই হাসমত আলী শিক্ষার্থী অপূর্বর বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মামলা করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা রিমান্ড আবেদনে বলেছেন, এই আসামি কোরআন অবমাননার সঙ্গে জড়িত মর্মে সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। জিজ্ঞাসাবাদে অপূর্ব পাল কোরআন শরিফ অবমাননার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার পেছনে অন্য কোনো শক্তি জড়িত কি না, তা শনাক্ত করা সম্ভব হবে।
এদিকে শুনানির সময় আদালতের জিজ্ঞাসাবাদে অপূর্ব পাল বলেন, ঘটনার সময়কার কিছুই তাঁর মনে নেই। তবে অদৃশ্য কোনো বিষয় থাকতে পারে বলে তিনি মনে করেন।