ট্রেন ছাড়বে বেলা সাড়ে তিনটায়। তার আগেই দুপুর সোয়া ১২টার দিকেই স্টেশনে হাজির দুলাল মিয়া। যাবেন জামালপুরে। ট্রেনের জন্য অপেক্ষা লম্বা হলেও বাড়ি ফেরা নিয়ে কোনো চিন্তা নেই তাঁর। কারণ ঈদে বাড়ি যাওয়াটা তাঁর কাছে ‘বোনাস’ পাওয়ার মতো। শুধু দুলাল মিয়া নন, কমলাপুর স্টেশনে আজ বুধবার বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে আসা অনেক যাত্রীর কাছে ঈদযাত্রাটা বোনাসের মতো।
তাঁদের মতে, রোজা ৩০টি ধরেই তাঁরা বাড়ি গিয়ে ঈদ উদ্যাপনের বিষয়টি পরিকল্পনায় রেখেছিলেন। আর ২৯টি হলে তখন ভাবনায় অন্য কিছু রাখতেন। বুধবার সকাল থেকে কমলাপুর স্টেশনে যাত্রী উপস্থিতি সেই অর্থে তেমন চোখে পড়েনি। স্বাভাবিক দিনের তুলনায়ও যেন ভিড় কম।
দুলাল মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কোনো ঝামেলা নেই। ঈদে বাড়ি যাওয়ার ইচ্ছা ছিল, ৩০ রোজা হওয়ায় তা পূরণ হইছে। এখন শান্তি। রোজা ২৯টি হলে তখন অন্যভাবে ভেবে দেখতাম। এখন বউ-বাচ্চা নিয়ে আরামে বাড়ি গিয়ে ঈদ করে আসি।’
জামালপুরগামী কমিউটার ট্রেনের যাত্রী মো. এমরান টিকিট পেয়ে বেজায় খুশি। ঢাকার আজিমপুরে ছোট ব্যবসা আছে তাঁর। ঈদ বৃহস্পতিবার হওয়ায় দুই কর্মীকে ছুটি দিয়ে নিজেও যাচ্ছেন নাড়ির টানে। এমরান বলেন, ‘বাড়িতে মা-বাবা, বউ আছে। আজ ঈদ হলে গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে হলেও যেতাম। তবে এক দিন সময় পাওয়ায় আরামে যেতে পারছি। কোনো সমস্যা ছাড়াই।’
মূলত ঈদের দিন আন্তনগর ট্রেন বন্ধ থাকে। তাই চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে তিন দিনের টিকিট বিক্রি বন্ধ রেখেছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে। ঈদ ১১ এপ্রিল হওয়ায় ১০ ও ১২ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি গতকাল মঙ্গলবার রাতে শুরু করেছিল রেলওয়ে।
রেলওয়ে ঢাকা বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শাহ আলম কিরণ বলেন, ‘আমরা ব্লক থাকা টিকিট গতকাল রাত থেকে বিক্রি শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত অধিকাংশ টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। হয়তো কিছুসংখ্যক আসন খালি আছে। ঈদের আগের দিন হওয়ায় এমন হয়েছে।’
শাহ আলম কিরণ আরও বলেন, ‘প্রতিদিন ৬৭টি ট্রেন ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এর মধ্যে আন্তনগর ট্রেন আছে ৪৭টি এবং লোকাল ও মেইল ট্রেন ২৫টি। আজ পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ও কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ছাড়া সব কটি ট্রেন ঢাকা স্টেশন ছেড়ে যাবে।’