সাভারে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক এবং ছাত্রলীগের স্টিকার লাগানো দুটি গাড়ি জব্দ করেছে পুলিশ।
সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, দুটি ব্যক্তিগত গাড়িসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ফজলে রাব্বি ইসলাম নামে এক ভুক্তভোগী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকাল রোববার রাতে সাভারের জালেশ্বর আমতলা থেকে বাসা পরিবর্তন করছিলেন প্রবাসী ব্যবসায়ী ইলিয়াস হোসেন। ইলিয়াস আমার প্রতিবেশী এক বোনের স্বামী। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে আমি তাঁকে (ইলিয়াস) বাসা পরিবর্তনে সহায়তা করছিলাম। রাত ১টার দিকে ঢাকা জেলা (উত্তর) ছাত্রলীগের সহসভাপতি সুবাস খান হৃদয় দুটি ব্যক্তিগত গাড়িতে কয়েকজন সহযোগী নিয়ে সেখানে আসেন। দুটি গাড়িতেই (ঢাকা-মেট্রো-গ-১৪-৬১৯৯ ও ঢাকা-মেট্রো-গ-১৪-৩০০৯) উত্তর জেলা ছাত্রলীগের স্টিকার ছিল। সুবাস খান ও তাঁর সহযোগীরা গাড়ি থেকে নেমেই ইলিয়াস খান আর আমাকে মারধর করতে থাকেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘একপর্যায়ে অস্ত্রের মুখে তাঁরা আমাদের দুজনকে গাড়িতে তুলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক হয়ে হেমায়েতপুরে নিয়ে যান। এরপর পাঁচ লাখ টাকার বিনিময়ে তাঁরা ইলিয়াসকে ছেড়ে দিতে রাজি হন। টাকা দেওয়ার কথা বলে ইলিয়াস কৌশলে ছাত্রলীগ নেতা সুবাস খানসহ অন্যদের বাসার কাছে নিয়ে আসেন। এ সময় ইলিয়াসের পরিবারের পক্ষ থেকে জরুরি সেবা ৯৯৯ ফোন পেয়ে সাভার থানা-পুলিশ সেখানে পৌঁছে যায়। পুলিশের গাড়ি দেখেই ছাত্রলীগ নেতা সুবাস খান দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুই গাড়িসহ সজীব, রাকিব ও হালিম নামে তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।’
এ বিষয়ে সাভার থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইলিয়াস দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে থাকেন। তিনি কানাডায় পাঠানোর কথা বলে রাজু আহমেদ নামে এক ব্যক্তিসহ কয়জনের কাছ থেকে এক কোটি পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছেন। এই মর্মে রাজু আহমেদ ইলিয়াসের বিরুদ্ধে দিন তিনেক আগে সাভার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। থানার এক কর্মকর্তা অভিযোগটির তদন্ত করছেন।’
তবে অপর ভুক্তভোগী ইলিয়াস হোসেন বিদেশে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের (উত্তর) সহসভাপতি সুবাস খান হৃদয়ের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও সংযোগ না পাওয়ায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের (উত্তর) সভাপতি সাইদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনার পর বিষয়টি আমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছি। প্রমাণিত হলে সুবাস খান হৃদয়ের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’