ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নাগরিক সেবা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণার দাবিতে আজ সোমবারও নগর ভবনের সামনে সমর্থকদের অবস্থান নিতে দেখা যায়।
গত ১৪ মে থেকে শুরু হয়েছে এই অচলাবস্থা। সেই হিসাবে গত ১৩ দিন ধরে চলছে এই কর্মসূচি। তবে আজ সোমবার অবস্থান কর্মসূচিতে নতুন করে যোগ দিয়েছেন শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সদস্যরা।
আজ সকাল থেকেই ডিএসসিসি ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন ইশরাক হোসেনের সমর্থকেরা এবং সিটি করপোরেশনের শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের একাংশ। এ সময় তাঁরা স্লোগান দিতে থাকেন ‘মেয়র ছাড়া অফিস নেই’, ‘টালবাহানা চলবে না, ইশরাককেই চাই’—এমন স্লোগান দিতে থাকেন।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ারা জানান, নানা অজুহাতে মেয়র পদ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি করা হচ্ছে। আমরা তা মানি না। জনগণের ভোটে নির্বাচিত ইশরাক হোসেনকে দ্রুত দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. আরিফ চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইশরাকের প্রতি কর্মচারীদের একটা ভালোবাসা আছে। তাঁকে যত দিন পর্যন্ত শপথ না পড়াবে তত দিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। নির্বাচিত মেয়র ছাড়া সিটি করপোরেশনে কোনো কাজ হচ্ছে না।’
ডিএসসিসি সূত্রে জানা গেছে, সেবা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ায় প্রশাসন উদ্বিগ্ন। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা।
এদিকে দৈনন্দিন জরুরি সেবা পেতে এসে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়ছেন নগরবাসী। নগরভবনের প্রবেশপথ আটকে অবস্থান নেওয়ার কারণে অনেকেই প্রয়োজনীয় কাজ সারতে এসে ফিরে যেতে বাধ্য হন।
বংশাল এলাকার বাসিন্দা সুমন হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জন্মনিবন্ধন সংশোধনের জন্য এসেছিলাম। কিন্তু অফিস বন্ধ, কেউ কাজ করছে না। কবে হবে তাও কেউ বলতে পারছে না।’
নগরভবনে সেবা নিতে আসা রাশিদা বেগম নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘তিন দিন ধরে ছেলের দোকানের জন্য ট্রেড লাইসেন্সের কাগজ জমা দিতে আসছি। প্রতিবারই এসে দেখি গেট বন্ধ, কেউ ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছে না। বাড়ি ফিরে যেতে হয়। জানি না এই সমস্যার কবে সমাধান হবে।’
তবে নগরবাসী দ্রুত এই অচলাবস্থার অবসান চায়। তারা বলছেন, রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের বলি হয়ে যেন সাধারণ মানুষের মৌলিক সেবা বন্ধ না হয়।