তামাকজাত দ্রব্যের উৎপাদন ও গ্রহণ কমাতে কর বাড়ানোই যথেষ্ট নয়, এ জন্য প্রয়োজন জোরাল সামাজিক আন্দোলন—এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ও সচিব মোহাম্মদ আবদুল মজিদ। আজ শুক্রবার (৩০ মে) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থার (মানস) সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ও সচিব মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেছেন, ‘রাজস্বের অন্যতম উৎস হচ্ছে তামাক খাত। আমরা যতই ট্যাক্স বাড়াই না কেন, তা তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদন বা গ্রহণ কমাতে পারব না। কমানোর জন্য একমাত্র উপায় সামাজিক আন্দোলন করা, স্ববিরোধী থেকে বেরিয়ে আসা।’
রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা তামাক বা নেশাদ্রব্য কমানোর জন্য ট্যাক্স বাড়িয়ে দিচ্ছি। তাতে রেভিনিউ উন্নতি হচ্ছে, কিন্তু আসলেই কি নেশাদ্রব্য কমানো যাচ্ছে। যিনি খাবেন, তিনি তো খাবেনই। নেশাদ্রব্য ব্যবহার কমাতে আমাদের তামাক ও অন্যান্য নেশাদ্রব্যের ক্ষতিকর সম্পর্কে জানাতে হবে ও এর উপলব্ধি বোঝাতে হবে। ট্যাক্স বাড়িয়ে কমানো যাবে না, সামাজিক আন্দোলন করতে হবে।’
মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, ‘ধান চাষের চেয়ে যদি তামাক চাষে আয় বাড়ে, তাহলে তো তামাক চাষই করবে তাঁরা। এখানে কৃষকদের বোঝাতে হবে যুবসমাজ রক্ষার জন্য ধান চাষই করতে হবে। সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুললে নিজের ভালো উপলব্ধি যখন করবে, তখনি এসব গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবে। আমরা চাই না এসব বন্ধ করার জন্য ট্যাক্স বাড়িয়ে স্বাস্থ্য খাতে খরচ বাড়াতে।’
এ সময় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অনুষ্ঠানের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের এক নীরব মহামারির নাম ‘‘তামাক’’। তামাক ছাড়া আর এত বড় দ্বিতীয় কোনো কারণ নেই, যা বছরে সারা বিশ্বে ৮৭ লক্ষাধিক মানুষের প্রাণহানির কারণ হতে পারে। আমাদের দেশেও তামাকের ভয়াবহতা উদ্বেগজনক, প্রতিদিন ৪৪৫ জন মানুষ মারা যায় তামাকের কারণে সৃষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে। অথচ এ বিষয়ে তেমন কোনো আলোচনা বা খবর নেই। অকালমৃত্যু প্রতিরোধে নেই যথেষ্ট প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা। আমাদের তামাক বা নেশাদ্রব্য নিরোধ করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থার বিভিন্ন পর্যায়ের ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা।