হোম > সারা দেশ > ঢাকা

নাতির বিয়েতে মেয়ের জামাতা হারিয়ে শোকস্তব্ধ রাবেয়া

নাজমুল হাসান সাগর, ঢাকা

রাজধানীর দক্ষিণ খানের কাওলা বাজারের আফিল মেম্বার মার্কেটের অপর পার্শ্বের রাস্তা ধরে কিছুটা সামনে এগোলে একটি চারতলা ভবন চোখে পড়ে। এই ভবনেই গতকাল ছিল বিয়ের আয়োজন। যদিও সে আয়োজনের ছিটেফোঁটাও আজ চোখে পড়ল না। ভবনের অন্য বাসিন্দাদের সহযোগিতায় জানা গেল দোতলায় থাকে মো. রুবেলের পরিবার। যে রুবেল গতকাল উত্তরার জসিমউদদীন এলাকায় প্রাণ হারিয়েছেন বিআরটি প্রকল্পের নির্মাণাধীন উড়াল সেতুর গার্ডার চাপায়। 

যদিও বাড়িতে এই পরিবারের কোনো সদস্য ছিলেন না, সবাই সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে। কথা বলার মতো পাওয়া গেল নিহত রুবেলের শাশুড়ি আর শ্যালকের স্ত্রীকে। 

নাতির বিয়েতে আনন্দ করতে এসে মেয়ের জামাতা হারিয়ে শোকস্তব্ধ রাবেয়া বেগম। রাবেয়া বলছিলেন, ‘পোলারে বিয়া দিয়া, ঘরে বউ আইনা খুব খুশি আছিলো আমার মেয়ার জামাই। মনে হয় ব্যাটার বউ না, মেয়া নিয়া আইছে। বউ ভাতের অনুষ্ঠান শ্যাষ কইরা ব্যাটা, বউ আর দুই বিয়াইন নিয়া নিজেই গাড়ি চালায়া আশুলিয়ায় বিয়াই বাড়ি যাইতেছিলো। খুশি মনে বাড়ি থাইকা বাইর হইলেও সে আর ঘরে ফিরলো না। যাওয়ার আগে বইলা গেছিলো, আমরা যারা শরিয়তপুর থাইকা আইছি তারা যেন না যাই। পোলার শ্বশুর বাড়ি থাইকা জামাতা (রুবেল) আইবো তারপর আমরা যামু। আমার জামাতা কী আর আইবো?’ 

পাশে বসে চোখ মুছলেন রুবেলের শ্যালকের বউ রেহানা বেগম। তিনি বলেন, ‘চোখের পলকে বিয়ে বাড়ি শ্মশানে পরিণত হলো। একটা পরিবার ধ্বংস হয়ে গেল। গতকাল দুর্ঘটনায় পড়ার আগেই দুলাভাই তার ছেলে হৃদয় আর ছেলের বউ রিয়া মনিকে পাশাপাশি বসিয়ে অনেক কিছুই বলেছেন। একজন বাবা মরার আগে তার ছেলেকে যেসব উপদেশ দেয় তার সবই যেন ছিল গতকাল দুলাভাইয়ের কথায়। তিনি হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন তার হাতে সময় খুব কম। বড় ভালো মানুষ ছিল আমার ননদের জামাতা। এভাবে চলে যাবে ভাবতে পারি নাই।’ 

গতকালের এই ঘটনা সম্পূর্ণ অবহেলাজনিত হত্যা এবং এটাকে কোনোভাবেই দুর্ঘটনা বলে মানতে চান না রেহানা বেগম। তিনি বলেন, যাদের খামখেয়ালিতে এতগুলো প্রাণ অকালে ঝরে গেল তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক। বিচার করে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হোক যেন স্বজন হারিয়ে এই দেশের আর কেউ এমন শোক আর কষ্ট না পাক। 

এদিকে আশুলিয়ার খেজুরবাগানের একটি ভবনের ছয় তলায় সাবলেট থাকতেন নববিবাহিতা রিয়া মনি ও তাঁর মা ফাহিমা বেগম। ওই ভবনে গিয়ে রিয়ার পরিবারের কাউকে পাওয়া গেল না। ভবনের ম্যানেজার সফিকুল ইসলাম জানালেন, ঘটনার পরে এই বাসায় তাদের পরিবারের আর কেউ নেই। 

রিয়া মনিদের প্রতিবেশী নাছরিন বেগমের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘সিআইপিএল নামের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন রিয়ার মা। আর রেডিএন্স পোশাক কারখানায় কাজ করত রিয়া। বিয়ে নিয়ে ভালোই আনন্দে ছিল তাঁরা, কিন্তু কী থেকে কী হয়ে গেল।’ 

গতকাল উত্তরার জসিমউদদীন এলাকায় গার্ডার পরে আরও নিহত হয়েছে রিয়ার খালা ঝর্ণা (২৮) এবং ঝর্ণার দুই সন্তান জান্নাত (৬) ও জাকারিয়া (২)। সবার মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে হস্তান্তরের জন্য রাখা হয়েছে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে। আর আহত নবদম্পতি হৃদয় মন্ডল ও রিয়া মনি চিকিৎসাধীন আছেন একই হাসপাতালে।

শহীদ জিয়ার কবরের পূর্ব পাশে খোঁড়া হচ্ছে নতুন কবর

খালেদা জিয়ার জানাজা: যেসব পথে নিয়ন্ত্রিত থাকবে যান চলাচল

রাষ্ট্রীয় শোক: ঢাকায় ৩ দিন আতশবাজি, পটকা ফোটানো নিষিদ্ধ

খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে বাড়ানো হলো মেট্রোরেলের ট্রিপ

হাদি হত্যা মামলা: সিবিউন-সঞ্জয়ের তৃতীয় দফায় রিমান্ড, ফয়সাল নামে আরও একজন রিমান্ডে

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাবিতে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের কালো ব্যাজ ধারণ

রাজধানীর রামপুরায় অটোরিকশার ধাক্কায় বৃদ্ধের মৃত্যু

গয়েশ্বর চন্দ্রের আসনে বিএনপির বিদ্রোহী তিন বড় নেতাসহ ১৬ প্রার্থী, শক্ত লড়াইয়ের আভাস

খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর শুনে এভারকেয়ারের সামনে ভিড়, পুলিশের ব্যারিকেড

হারিয়ে যাওয়া কনাই নদ উদ্ধার উদ্‌যাপন