বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় রাজধানীসহ সারা দেশ ফিরে গেছে তার আগের রূপে। স্বাভাবিক নিয়মে চলছে গণপরিবহন। বাধা ছাড়াই ঢাকা ফিরছে মানুষ। লোকাল ট্রেন ও অন্য গণপরিবহনে আসনসংখ্যার চেয়ে বেশি যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। লঞ্চের ডেকের অবস্থাও একই। কোথাও নেই স্বাস্থ্যবিধি।
আখাউড়া থেকে তিতাস কমিউটার ট্রেনে কমলাপুর এসেছেন সাইফুল ইসলাম। তাঁর অভিযোগ, ‘লোকাল ট্রেনে আগের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। তবে যাত্রী নেওয়া হচ্ছে সিটের চেয়ে বেশি। তিতাস কমিউটার ট্রেনে দাঁড়ানোর কোনো জায়গা ছিল না। আর স্বাস্থ্যবিধির কথা কী বলব! এত যাত্রী নিলে স্বাস্থ্যবিধি কীভাবে মানবে।’
বেশি যাত্রী নেওয়ার বিষয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনের অ্যাটেনডেন্ট মিহির শেখ বলেন, ‘লোকাল ট্রেনে দাঁড়িয়ে যাত্রী নেওয়া হয়, এটা তো সবাই জানে। কমলাপুর স্টেশন পার হওয়ার পরে প্রতিটা স্টেশনে যাত্রীদের চাপ থাকে। সরকার তো বলেছে আগের মতোই চলতে পারবে। সে জন্য আমরা সব সিটে যাত্রী নিচ্ছি। চাপ থাকায় দাঁড়িয়েও যাত্রী নেওয়া হয়।’
১৯ দিন পর প্রাণ ফিরে ফিরেছে ঢাকার নদীবন্দরে। যাত্রীদের পদচারণা বেড়েছে ঘাটে। বিকেলের পর লঞ্চে যাত্রীর চাপ বাড়তে থাকে। লঞ্চের ডেকের যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। ইসমাইল হোসেন বলেন, ডেকে বরিশাল যাব। এখানে স্বাস্থ্যবিধি কীভাবে মানব? এখানকার যা ব্যবস্থা, তাতে একজন আরেকজনের পাশাপাশি বসা ছাড়া উপায় নাই।
তবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ঢাকা নদীবন্দরের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘মাস্কবিহীন কাউকে টার্মিনালে প্রবেশ করতে দিচ্ছি না। ডেকেও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে।’
বাসে আগের ভাড়া নেওয়াতে যাত্রীরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তবে কিছু বাসে আসনের বেশি যাত্রী তোলা হয়। গণপরিবহনের অনেক চালক ও হেলপারের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। যাত্রীরাও সবাই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। আফজাল হোসেন নামে এক বাসযাত্রী বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর গণপরিবহন চালু হওয়ায় আমি যাত্রী হিসেবে খুশি। লকডাউনে বাস না চলায় অফিসে যেতে ভোগান্তি হয়েছে, বেশি টাকা খরচ হয়েছে।’
বাসের চালকেরা বলছেন, তাঁরা বাসে বেশি যাত্রী নিতে চাচ্ছি না। অফিসের সময়ে চাপ থাকায়, দুই একজন যাত্রী বেশি উঠে পড়ছেন।
জনস্বাস্থ্যবিদ ও আইইডিসিআরের উপদেষ্টা মুশতাক হোসেন বলেন, ‘এখনো করোনা সংক্রমণের হার বিপৎসীমার ওপরে আছে। সুতরাং এই মুহূর্তে ভিড় এড়িয়ে চলাই ভালো। মানুষের ভিড় যদি কমানো যায় তাহলে সংক্রমণের হার কমবে। এখন বাইরে বের হলে দুই সপ্তাহ পর সংক্রমণ বাড়বে।’