কুমিল্লায় চোরাই গাড়ির যন্ত্রাংশ খুলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নতুন গাড়ি তৈরি করে বিক্রি করছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এ চক্রের ১৮ জনকে ২৯টি চোরাই গাড়িসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। আজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-১১ সিপিসি-২ এর কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, ‘সম্প্রতি কুমিল্লাসহ সারা দেশে গাড়ি চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে খুন, অর্থ দাবি, আহতসহ বিভিন্ন মর্মান্তিক ঘটনা বেড়ে গেছে। এমন কিছু ভুক্তভোগীর সাধারণ ডায়েরি ও লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব মাঠে কাজ শুরু করে এবং গাড়ি চোর চক্রের কয়েকটি সিন্ডিকেটের সন্ধান পায়। গত রোববার থেকে আজ সোমবার ভোর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।’
অভিযানে দুটি মোটরসাইকেল, একটি কাভার্ড ভ্যান, ২৬টি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন গাড়ির যন্ত্রাংশ ও গাড়ি তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানা মামলা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার আড়াইওড়া গ্রামের কাউসার আলী খলিল (৪৫), মো. কাইয়ুম (৪২), মো. সাজিদ হোসেন (২০), বাটপাড়া গ্রামের নাজমুল হোসাইন রবিউল (১৯), হাড়ং গ্রামের মো. আবু কাউসার (৩৫), বদরপুর গ্রামের মো. পিয়াস (৩৩), আড়াইওড়া গ্রামের মো. জহির মিয়া (৪০), মধ্যম মাঝিগাছা গ্রামের মো. জামশেদ হোসেন (২১), শিমরা গ্রামের হৃদয় হাসান (১৯), শাসনগাছা গ্রামের মনির মিয়া (৩৯), আড়াইওড়া গ্রামের মো. মজিদ (৩০), জেলার দেবিদ্বার থানার নবীয়াবাদ গ্রামের মো. সাইফুল ইসলাম জাহাঙ্গীর (৪৫), বুড়িচং থানার কংশনগর গ্রামের শুক্কুর আলী (২৩), পারোয়ারা গ্রামের রিপন মিয়া (২৭), পাঝয়ারা গ্রামের মো. তাজুল ইসলাম (৩২), পশ্চিম সিংহ গ্রামের মো. ওমর ফারুক (২৮), চান্দিনা থানার শ্রীমন্তপুর গ্রামের মো. সাইফুল (৩২), ব্রাহ্মণপাড়া থানার শাহেরাবাদ গ্রামের মো. আল আমিন (২৪)।
দ্বিতীয় গ্রুপের কাজ হলো চুরি করা গাড়ি বিক্রির জন্য যে এলাকা থেকে গাড়ি চুরি হয়েছে, ওই এলাকা ছাড়া অন্য এলাকার গ্যারেজ মালিকদের কাছে গাড়ি বিক্রি করা এবং পৌঁছে দেওয়া।
তৃতীয় গ্রুপের সদস্যরা দ্বিতীয় গ্রুপ থেকে গাড়ি স্বল্পমূল্যে ক্রয় করে নিজস্ব গ্যারেজে নিয়ে অতিদ্রুত গাড়ির ব্যাটারি ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ খুলে রং পরিবর্তন করে। পরে কয়েকটি গাড়ির যন্ত্রাংশ একত্র করার মাধ্যমে নতুন গাড়িতে পরিণত করে এবং নতুন গাড়ি হিসেবে গ্রাহকের কাছে বিক্রি করে। নতুন গাড়ির সঙ্গে চুরি যাওয়া গাড়িটির কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায় না বলে এই চক্রের সদস্যরা নির্ভয়ে এই কাজ পরিচালনা করে আসছে।
জানা যায়, চোর চক্র প্রায় ১০ বছর ধরে এই কাজে সম্পৃক্ত।