হোম > সারা দেশ > কুমিল্লা

কুবিতে ভিসিকে কার্যালয়ে প্রবেশে বাধা, শিক্ষক সমিতি ও ছাত্রলীগ সংঘর্ষ

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন নিজ কার্যালয়ে প্রবেশ করতে গেলে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষক সমিতির বিরুদ্ধে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতা-কর্মী ও শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের মধ্যে মারামারি ও উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। 

আজ রোববার বেলা ১টা ১২ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কার্যালয়ে প্রবেশ করতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। 

প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, বেলা ১টা ১২ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এফ এম আবদুল মঈন নিজ কার্যালয়ে প্রবেশ করার জন্য প্রশাসনিক ভবনে এলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি উপাচার্যকে প্রবেশে বাধা দেয়। এ ঘটনার সূত্র ধরে প্রথমে শিক্ষক সমিতির সঙ্গে উপাচার্যের ধাক্কাধাক্কি হয়। পরবর্তী সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত শাখা ছাত্রলীগের আগামী কমিটিতে পদপ্রত্যাশী নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের মারামারি হয়। 

এই মারামারির ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগে পদপ্রত্যাশী আমিনুর বিশ্বাসকে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ মারধর করেন। এ ছাড়া শাখা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীরা আবার শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের ওপর চড়াও হন। এ সময় অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শামিমুল ইসলাম, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জান্নাতুল ফেরদৌসসহ আরও চারজন শিক্ষক আহত হয়েছেন বলে জানা যায়। 

এ বিষয়ে লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘একাধিকবার শিক্ষকদের ওপর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা, প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা আক্রমণ করেছে। এ রকম ঘটনা কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েই ঘটে নাই। আজকের এই ঘটনার পর আমরা উপাচার্যের পদত্যাগ চাই।’ 

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইভিনিং এমবিএর শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ পদপ্রত্যাশী বিপ্লব দাস বলেন, ‘আজকে আমরা প্রশাসনিক ভবনে ব্যাংকে ইএমবিএ কোর্সের জন্য টাকা জমা দিতে এসেছিলাম। তখন দেখছিলাম উপাচার্য স্যার গেট দিয়ে ঢুকছেন। আমরা তখন শুধু স্যারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। তখনই শিক্ষক সমিতির নেতা-কর্মীরা স্যারকে ভেতরে ঢুকতে বাধা দেন। আমরা সঙ্গে থাকায় আমাদের ওপরেও তাঁরা আক্রমণ করেন।’ 

বিপ্লব দাস বলেন, ‘আমি হাতে ব্যথা পেয়েছি। তারপর যখন শিক্ষক সমিতির নেতা-কর্মীদের জিজ্ঞেস করতে যাই, ‘‘স্যার আপনারা কেন আমাদের সঙ্গে এমন করলেন’’ তখন তাঁরা আবার আমাদের ওপরে আক্রমণ করেন। আমাদের একজন ব্যথা পেয়ে হাসপাতালে আছেন।’ 

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, ‘উপাচার্য আজকে যা করেছেন, তা সারা দেশের উপাচার্যমহলের জন্যই লজ্জাজনক। উনি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দ্বারা পরিকল্পিতভাবে শিক্ষকদের ওপর হামলা করেছেন। আবার তিনি মিথ্যাচার করছেন, আমরা তাঁকে প্রবেশে বাধা দিয়েছি। বরং তাদের এসব কার্যক্রমে আমাদের ছয়জন শিক্ষক আহতও হয়েছেন।’ 

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি। 

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য আমরা তালা ভেঙেছি। মাননীয় উপাচার্য স্যার যখন তাঁর কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য যখন প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করতে যান, তখন তারা বাধা দেয় এবং উপাচার্যকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। তখন আমাদের প্রক্টরিয়াল বডির যারা দায়িত্ব পালন করছিলেন, তাদেরও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে তারা। আমি নিজেও হাতে ব্যথা পেয়েছি।’ 

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ আবদুল মঈন বলেন, ‘আমাকে মহামান্য রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়কে সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য। অথচ এরা কারা? এখানে (প্রশাসনিক বিল্ডিংয়ে) প্রবেশ করার সময় শিক্ষক সমিতির তিনজন আমার গায়ে হাত তুলেছে। একজন সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান, যাকে অন্যায়ভাবে ছুটি দেই নাই বলে আজ পারসোনালি আমাকে আক্রমণ করেছে। আরেকজন হলো মোর্শেদ রায়হান, যিনি নম্বর টেম্পারিংয়ের দায়ে অভিযুক্ত। আরেকজন হলো মার্কেটিংয়ের শিক্ষক মাহফুজ। এই ছেলে আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিতে চেয়েছিল। এসব কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো না। আমি পুরো জাতির কাছে জানাতে চাই, এই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে তালা সংস্কৃতি বন্ধ করতে চাই।’

এদিকে আজ বিকেল সাড়ে ৪টায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে উপাচার্য ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে আজ পর্যন্ত ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা করেন এবং আজ তিনি তিনজন শিক্ষক দ্বারা হেনস্তার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। তাঁরা হলেন—শিক্ষক সমিতির সভাপতি মেহেদী হাসান, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও শিক্ষক সমিতির কোষাধ্যক্ষ মুর্শেদ রায়হান এবং মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান।

এরপর শিক্ষক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যের সামনে আরেকটি মানববন্ধন করেন। সেখানে তাঁরা উপাচার্যের দুর্নীতি ও নানা বিষয়ে কথা বলেন। এ ছাড়া তাঁরা উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবি করেন। এই প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে তাঁরা আজকের মতো তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি শেষ করেন। 

এর আগে, ২৫ এপ্রিল শিক্ষক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন দপ্তরে আবারও তালা দেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষের গাড়ি আটকে পথ রুদ্ধ করে রাখেন এবং রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।

কুমিল্লা সীমান্তে বিজিবির তল্লাশি অভিযান ও টহল জোরদার

‎সাত শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে কুবিতে ‘রান উইথ শিবির’ কর্মসূচি

ভুট্টাখেতে অটোরিকশাচালকের গলাকাটা লাশ

সড়কে পড়ে ছিল যুবকের মাথা থেঁতলানো লাশ

পা দিয়ে লিখেই পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চায় আরশাদুল, অর্থের অভাবে যেতে পারছে না স্কুলে

চাঁদাবাজদের নির্মূল না করা পর্যন্ত লড়াই অব্যাহত থাকবে: হাসনাত আবদুল্লাহ

কুমিল্লায় যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, গ্রেপ্তার ২

নদীতে গোসলের সময় ট্রলি উল্টে এক পরিবারের ৩ নারী নিহত

গোমতীর দুই তীরে মাটি লুটের মচ্ছব

হোমনায় এসি ল্যান্ডের গাড়ির ধাক্কায় দুই বছরের শিশু নিহত