কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার মহালক্ষীপাড়ার একটি পুকুর লাল শাপলার সৌন্দর্যে রঙিন হয়ে উঠেছে। যেন প্রকৃতি নিজ হাতে আঁকা এক শোভাময় চিত্রকর্ম। গ্রামটির দক্ষিণপাড়ার ভূঁইয়া বাড়ি ও শীল বাড়ির মাঝখানে অবস্থিত পুকুরটির দিকে তাকালেই চোখ আটকে যায়, মন হারিয়ে যায় শাপলার মায়ায়।
শুধু স্থানীয় নয়, আশপাশের এলাকা ও দূরদূরান্ত থেকেও প্রতিদিন ছুটে আসছেন অসংখ্য মানুষ। কেউ ছবি তুলছেন, কেউবা বসে প্রকৃতির নীরব সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। ব্রাহ্মণপাড়া-শিদলাই ও মহালক্ষীপাড়া-ধান্যদৌল সড়কের পাশে হওয়ায় পথচারীরাও থমকে যান পুকুরটির মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখেন।
স্থানীয়দের মতে, প্রায় আট বছর আগে এই পুকুরে একটি মাত্র লাল শাপলার গাছ রোপণ করা হয়। গীতা রানী রায়ের স্বামী হরিমন চন্দ্র রায়, যিনি পেশায় একজন কবিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার অষ্টজঙ্গল এলাকা থেকে শাপলার একটি চারা এনে পুকুরে লাগান। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই একটি গাছ থেকেই গোটা পুকুর জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে হাজারো শাপলা।
গীতা রানী রায় বলেন, ‘আমার স্বামীর ওষুধ তৈরির কাজে ফুলের দরকার হতো। তাই তিনি একটি শাপলার গাছ এনে পুকুরে লাগিয়েছিলেন। এখন সেই এক গাছ থেকেই পুরো পুকুর ভরে গেছে।’
এক দর্শনার্থী বলেন, ‘লাল শাপলা সচরাচর দেখা যায় না। এখানকার ফুলগুলো একেবারে আলাদা, মন ছুঁয়ে যায়।’
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মোহাম্মদ সোহেল ভূঁইয়া বলেন, ‘এই পুকুরের শাপলা এখন আশপাশের মানুষের কাছে এক আনন্দের জায়গা হয়ে উঠেছে। আমি চাই, পুকুরটির চারপাশ উন্নয়ন করে এমন পরিবেশ তৈরি করতে, যাতে মানুষ নিরাপদে বসে সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন।’
সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ফুটে থাকা লাল শাপলাগুলো পুকুর জুড়ে সৃষ্টি করেছে অপূর্ব এক প্রাকৃতিক দৃশ্য। এই উপহার শুধু চোখ নয়, প্রশান্তি দেয় হৃদয়কেও। সামান্য পরিচর্যা করলে এটি হয়ে উঠতে পারে স্থানীয় পর্যটনের সম্ভাবনাময় একটি কেন্দ্র।