ফেসবুক পোস্টে একটি দরিদ্র পরিবার না খেয়ে রোজা রাখছে এবং বইয়ের অভাবে পরিবারের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীর পড়াশোনা বন্ধের মুখে—এমন তথ্য জানতে পেরে অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছেন চট্টগ্রাম-৪ সীতাকুণ্ড আসনের সংসদ সদস্য দিদারুল আলম।
গতকাল শনিবার বিকেলে এমপি পরিবারটির জন্য খাদ্য, বস্ত্র ও ছাত্রীটির যাবতীয় বই কিনে পাঠিয়েছেন। এদিকে বই পেয়ে আবেগে আপ্লুত ছাত্রীটি। পড়াশোনা বেঁচে থাকার আনন্দে সাংসদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ছাত্রী ও তার অভিভাবকেরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ মার্চ এক মধ্যবয়সী নারী বকুল (৫০) সীতাকুণ্ড পৌর সদর বাজারে বিভিন্ন দোকানে ঘুরে তার নবম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে স্বর্ণার জন্য গাইড বই কেনার আকুতি নিয়ে ঘুরছিলেন। ওই নারী জানান, তাঁর পরিবার এতটাই কষ্টে আছে যে অনাহারে অর্ধাহারে রোজা রাখছেন। তাই গাইডগুলো কেনার সামর্থ্য নেই। বিদ্যালয় থেকে বলা হয়েছে অবশ্যই গাইড বইগুলো লাগবে। কিন্তু তাঁর এই আকুতিতে কেউ কর্ণপাত করছিলেন না। একপর্যায়ে তিনি স্থানীয় সংবাদকর্মী সৌমিত্র চক্রবর্তীর কাছে এসে মেয়ের পড়াশোনা অব্যাহত রাখতে গাইডগুলো কিনে দেওয়ার আকুতি জানান এবং অনাহারে রোজা রাখার কথা বলে কাঁদতে থাকেন। সব শুনে নিজের ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে পরিবারটির অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরেন সাংবাদিক সৌমিত্র। বিষয়টি জেনে তাৎক্ষণিক খাদ্য সহায়তা পাঠান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদাত হোসেন।
এদিকে পোস্ট দেখে স্থানীয় এমপি দিদারুল আলম মেয়েটির জন্য নবম শ্রেণির যাবতীয় বই কিনে পাঠানোর কথা জানান। এমপির প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী শনিবার দুপুরে তাঁর প্রতিনিধি মোস্তফা হাকিম গ্রুপের কর্মকর্তা মো. জসীম উদ্দিন ছাত্রীটির অস্থায়ী বাড়ি উপজেলার বটতল কেদারখীল মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় গিয়ে স্বর্ণা, তার বাবা মো. জসীম ও মা বকুলের হাতে বই, খাদ্য ও শাড়ি তুলে দেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রেস ক্লাবের সভাপতি সৌমিত্র চক্রবর্তী মো. মাসুদসহ প্রমুখ।
বই ও অন্যান্য উপহার পেয়ে খুশি অসহায় পরিবারের সদস্যরা। জানতে চাইরে ছাত্রীর মা বকুল বলেন, ‘আপনাদের এ সহযোগিতা না পেলে জানি না মেয়ের বইয়ের জন্য আরও কতজনের পা ধরতে হতো। হয়তো পড়াশোনাও বন্ধ হয়ে যেত। এ ঋণ আমরা শোধ করতে পারব না।’