চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়া থানার বউবাজার এলাকা। ভোট চেয়ে প্রচার চালাচ্ছিলেন এই আসনের (চট্টগ্রাম-৯) নৌকার প্রার্থী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তাঁকে দেখে এগিয়ে যান ৫৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ আবু জাফর মিয়া। নওফেলও এগিয়ে গিয়ে বৃদ্ধকে বুকে জড়িয়ে নেন। আবু জাফর মিয়া নিজের প্রত্যাশার কথা জানান নওফেলকে। নওফেলও তাঁর কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং প্রত্যাশা পূরণের আশ্বাস দেন।
বউবাজার খাজা হোটেলের পাশে আবু জাফর মিয়ার বাসা। বাড়ি মহেশখালী। এই আসনের ভোটার তিনি। ৩০ বছর ধরে পরিবার নিয়ে এখানে বসবাস তাঁর। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই এলাকায় ইভ টিজারদের দৌরাত্ম্য বেশি। দলের নাম ভাঙিয়ে অনেকে অপকর্ম করছে। সেই বিষয়টি নওফেল সাহেবকে বলেছি। তিনি আজই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় পুলিশকে অনুরোধ করবেন বলে জানিয়েছেন।’
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে নওফেল ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বউবাজারের খাজা হোটেলের সামনে থেকে গণসংযোগ শুরু করেন। অলিগলি গিয়ে নিজের জন্য ভোট চান। বিভিন্ন বয়সীদের সঙ্গে কথা বলেন নওফেল। তাঁদের কাছ থেকে সমস্যার কথা জানতে চান। এ সময় নওফেল তাঁদের প্রত্যাশাগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। এর আগে ২০ নম্বর দেওয়ান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত কর্মিসভায় বক্তব্য দেন তিনি।
এই আসনে ব্যবসা-বাণিজ্য তথা অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ দ্রুত বাস্তবায়িত করতে জলাবদ্ধতা নিরসন, নতুন খাল খনন, রাস্তাঘাট প্রশস্তকরণ, সুষ্ঠু পরিকল্পনা অনুযায়ী এলাকাটিকে গড়ে তোলার দাবি স্থানীয়দের। এই আসনে রয়েছে চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, আসাদগঞ্জের মতো বাণিজ্যিক এলাকা। এই এলাকায় প্রায় ১ হাজার ৩০০ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
সেখানে প্রতিদিন ৫০০ কোটি টাকার বাণিজ্য হয়। বাকলিয়ার প্রত্যন্ত এলাকায় ছোট ও মাঝারি শিল্প কারখানা রয়েছে শতাধিক এবং দেশের আসবাবপত্রের বৃহত্তম বাজার বলিরহাট বাকলিয়ায় অবস্থিত। এসব মিল কারখানা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থেকে সরকার বছরে কয়েক শ কোটি টাকা আয় করে। আগে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন নামে চাঁদা তোলা হতো। সেটি এখন প্রায় বন্ধ বলে জানান খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী আমান উল্লাহ।
ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা জানান, কর্ণফুলী নদী, রাজাখালী খাল এবং চাক্তাইখাল বেষ্টিত চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ ও আছদগঞ্জে প্রায় সময় জোয়ারের পানি ঢুকে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। একবার জোয়ারের পানি ঢুকলে অন্তত ৩ ঘণ্টা জলাবদ্ধতায় মগ্ন থাকে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো। এতে ক্ষতি হয় শতকোটি টাকার বেশি। ব্যবসার জন্য প্রসিদ্ধ এলাকাটি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে।
বর্তমানে নতুন খাল খনন প্রকল্পটি চলমান রয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না বাকলিয়াসহ নগরবাসী। জলাবদ্ধতা নিরসনে সিটি করপোরেশন, সিডিএসহ সেবা সংস্থাগুলোতে এক কাতারে আনার উদ্যোগ নিয়েছিলেন নওফেল।