হোম > সারা দেশ > চট্টগ্রাম

পাহাড়ের বুক চিরে রাস্তা, অস্তিত্ব সংকটে বন্য প্রাণী

রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 

কমলা টিলা কেটে রাস্তা বানানো হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের রাউজানে নির্বিচারে কাটা হচ্ছে পাহাড় ও টিলা। গাছ কেটেও সাবাড় করা হয়েছে। তৈরি হয়েছে প্রায় আধা কিলোমিটার রাস্তা। উপজেলার পাহাড় বেষ্টিত ইউনিয়ন হিসেবে পরিচিত কদলপুর ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের একাধিক পাহাড়-টিলার বুকে এখন শুধু ভেকুর ক্ষত। অপর দিকে বৃক্ষ নিধনে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে বন্য প্রাণীরাও।

সরেজমিন দেখা গেছে, কদলপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত কমলার টিলা ও চুলাটিলা কেটে সমতল ভূমিতে পরিণত করেছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রথমে বৃক্ষ নিধন করে ভেকু দিয়ে নির্বিচারে মাটি কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। টিলাগুলোর সবুজ বৃক্ষ নিধন করে মাটি কেটে ফেলায় কমলা টিলার কমলা রঙের মাটি এখন দৃশ্যমান।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব পাহাড় ও টিলার সমতল থেকে চূড়া পর্যন্ত হাঁটার পথ রয়েছে। এ পথ অনুসরণ করে পাহাড়ের বুক চিরে প্রথমে সামনের অংশ কেটে ফেলা হয়। এরপর খনন যন্ত্রের সাহায্যে পাহাড়ের একটি অংশ কেটে ট্রাক প্রবেশের পথ তৈরি করে। বিক্রি করা হয় শত-শত ট্রাক মাটি।

স্থানীয়রা জানান, কমলার টিলার মাটি কেটে বিক্রি করছে সাবেক কদলপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য জয়নাল। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুস ছবুর মাটি কাটার সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য শিকার করে বলেন, ‘সড়ক প্রশস্ত করা হচ্ছে। কিছু মাটি বিক্রি করে শ্রমিকের বেতন দেওয়া হয়।’

এদিকে একই এলাকার চুলাটিলার (চুইল্লা) মাটি ১০ ফুট উচ্চতা ও ৩০ ফুট প্রশস্ত করে কাটা হচ্ছে। দেখে মনে হচ্ছে পাহাড়-টিলার বুক চিরে গেছে গভীর পথ। প্রায় আধা কিলোমিটার এ পথ কাটার সঙ্গে জড়িত স্থানীয় মাহমুদসহ আরও কয়েক যুবক।

স্থানীয় মকবুল হোসেন বলেন, ‘দুই মাস ধরে ভেকু দিয়ে নির্বিচারে মাটি কেটে বিক্রি করছে স্থানীয় কয়েকজন যুবক। তবে তাঁদের নাম আমার জানা নেই।’ টিলা কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের উপজেলা প্রশাসন দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে। এখন আমরা মাটি কাটা বন্ধ রেখেছি।’

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব মাটিবাহী ট্রাক চলাচল করলেও ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। তবে গত ৬ নভেম্বর বুধবার কদলপুর ইউনিয়নে পাহাড় কাটার দায়ে জড়িত কয়েকজনকে দুই লাখ টাকার জরিমানা করার কথা স্বীকার করেছেন দণ্ডপ্রাপ্ত মনছুর।

এ ছাড়া রাউজান সদর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রশিদর পাড়া এলাকা, কাজী পাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে চলছে পাহাড়-টিলা কাটার মহোৎসব। এসব পাহাড়-টিলার মাটি দিয়ে উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে কৃষিজমি ও শতবর্ষী পুকুর ভরাট করা হচ্ছে।

রাউজান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রিদুয়ানুল ইসলাম বলেন, অভিযান শুরু হয়েছে। উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে পাহাড় কাটা নিয়ে একটা অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে পাহাড় কাটার সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হওয়ায় এবং দায় স্বীকার করায় মনসুর নামের এক ব্যক্তিকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড জরিমানা দেওয়া হয়। এই অভিযান চলমান থাকবে।

এদিকে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহসভাপতি ও পরিবেশবিদ অধ্যাপক ড. মো. ইদ্রিস আলী বলেন, চট্টগ্রামে বড় সংকট পাহাড় কাটা। শহর কিংবা মফস্বল কোথাও থেমে নেই পাহাড় কাটা। এর প্রভাবে মাটি, উদ্ভিদ প্রাণী, জীবজন্তু, বন্য প্রাণী এবং বাস্তুতান্ত্রিকতার চরম ক্ষতি হচ্ছে। এর থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। কোনোভাবেই পাহাড়ে আঘাত করা যাবে না। বনের ওপর হাত দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বনকে সংরক্ষণ করে আমাদের বাঁচতে হবে।’

চট্টগ্রামে সংসদ নির্বাচন: তিন আসনে বিএনপির প্রার্থী নিয়ে উত্তেজনা

পেট্রোলিয়াম করপোরেশন: দেড় বছরেও চালু হয়নি ৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

সাঈদ আল নোমানের বিরুদ্ধে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

ভোটের মাঠে যারা বাধা হবে, তাদের অস্তিত্ব থাকবে না: আমীর খসরু

কুমিল্লা-৪: হাসনাত আবদুল্লাহর সমর্থনে সরে দাঁড়ালেন জামায়াত প্রার্থী

পটিয়ায় বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকচালক নিহত, আহত ৪

সাতকানিয়ায় খালের পাড় কেটে মাটি বিক্রি

সাতকানিয়ায় বন্দুকসহ এক ব্যক্তি গ্রেপ্তার

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

চট্টগ্রামে গিয়াস কাদেরের আসনে গোলাম আকবরকেও মনোনয়ন বিএনপির