মিরসরাইয়ে স্কুলশিক্ষকের ওপর দফায় দফায় হামলার প্রতিবাদে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি ও বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার সাহেরখালী ভোরের বাজারে এই বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়।
বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষ করে শিক্ষক নেতারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তোলেন। শিক্ষকেরা আসামি গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক মীর হোসেনের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে ও মানববন্ধন কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সাহিরখালি স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান মাহফুজ চৌধুরী।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন-উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুভাষ সরকার, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুছালেক, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (ফেডারেশন) আঞ্চলিক শাখার সাধারণ সম্পাদক কমল ভৌমিক, মহালঙ্কা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস মিয়া, আবুল কাশেম বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন, শফিউল আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সুফিয়ান, মিরসরাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিম উদ্দিন ভূঁইয়া, সাহেরখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এইচ এম মেজবাউল হক প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘গত রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ও সন্ধ্যায় শিক্ষক আবু ইউসুফ রাসেলের ওপর দিনের বেলায় রাস্তায় এবং রাতের বেলায় ঘরে হামলা হয়েছে। হামলা থেকে পরিবারের সদস্যরাও রেহাই পায়নি। মামলা নিতে তিন দিন গড়িমসি করেছে পুলিশ। আসামির ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে পুলিশের কর্মকর্তাদের আপ্যায়ন করতে দেখি। এই যদি হয় আমাদের সমাজ, এই যদি হয় আমাদের রাষ্ট্র এই যদি হয় আমাদের প্রশাসন আমরা কোথায় বাস করছি। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে আসামি গ্রেপ্তার না হলে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে।’
সন্ত্রাসীরা সরকারি দলের বলেও অভিযোগ করেন বক্তারা। কোনো রকম টালবাহানা করলে শিক্ষক সমাজ রাজপথে নামবে বলে হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষকেরা।
মিরসরাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুভাষ সরকার জানান, শিক্ষকের ওপর হামলার বিচারের দাবিতে আমাদের কর্মসূচি ধীরে ধীরে এগিয়ে যাবে। প্রাথমিক পর্যায়ে আজকের এই আন্দোলন। আন্দোলন শেষে আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছি। তাঁকে বিস্তারিত অবহিত করেছি। তিনি শিক্ষকদের দাবি পূরণে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা শিক্ষক আবু ইউসুফের ওপর হামলার উপযুক্ত বিচার চাই।
প্রসঙ্গগত, শাহেরখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবু ইউসুফ ও তাঁর ভাই আবু ইউনুছের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে একি স্কুলের ছাত্র আবু ইউনুসের বিরুদ্ধে। তাঁদের উভয়ের বাড়ি পাশাপাশি। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ পরদিন ২৭ ফেব্রুয়ারি মিরসরাই থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আজ বুধবার (১ মার্চ) মিরসরাই থানা উভয়পক্ষের মামলা নিয়েছে।
আবু ইউসুফ মাথায় গুরুতর আহত হয়ে এখনো চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অপর আহতরা হলেন, আবু ইউনুছ রুবেল, আবু তাহের মিয়া।
অপরদিকে শিক্ষার্থী আবু ইউনুসের বোন নাসিমা আক্তার বাদী হয়ে আরেকটি অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি অভিযোগে করেন, তারা ঘটনার কারণ জানতে শিক্ষক আবু ইউসুফের বাড়িতে গেলে তাঁদের ওপর হামলা করা হয়েছে। এ সময় নুরুল হক, ইলিয়াস, ইউনুছ রোকেয়া বেগম, তানজিনা আহত হয়েছেন।