চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় ইলিশের নিরাপদ প্রজনন রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। আজ রোববার রাত ১২টার পর থেকে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ আহরণে নদীতে নামবে জেলেরা। ইতিমধ্যে জাল ও নৌকা মেরামত করে প্রস্তুত তারা। জেলেরা নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাওয়ার আশা করছে।
আজ সকালে সদর উপজেলার আনন্দ বাজার, সাখুয়া, বহরিয়া বাজার ও হরিণা ফেরিঘাটসংলগ্ন জেলেপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, নৌকা ও জাল নিয়ে জেলেরা প্রস্তুত হচ্ছে। নদী উপকূলীয় এলাকার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও আড়তগুলোও প্রস্তুত হচ্ছে ইলিশ বেচাকেনার জন্য।
সাখুয়া এলাকার জেলে শাহজাহান গাজী বলেন, ‘ইলিশ আমাদের সম্পদ। প্রকৃত জেলেরা কখনো মা ইলিশ শিকার করে না। আমরা এই ২২ দিন জাল ও নৌকা মেরামত করেছি। আল্লাহর ইচ্ছায় এখন নদীতে নামলে ইলিশ পেতে পারি, নাও পারি।’
একই এলাকার জেলে আহসান হাবিব বলেন, ‘বিগত বছরের তুলনায় এবার আমাদের এলাকায় জেলেদের মধ্যে আইন মানার প্রবণতা বেড়েছে। খুব কমসংখ্যক জেলেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকার করেছে। কিছু মৌসুমি জেলে মা ইলিশ শিকার করার সাহস দেখায়।’
হরিণা ফেরিঘাট এলাকার মাছ ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম সৈয়াল বলেন, ‘২২ দিন বেকার ছিলাম। এখন আমাদের ঘাটের ব্যবসায়ীরা আড়ত পরিষ্কার করে বেচাকেনার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। পদ্মা-মেঘনায় ইলিশের বিচরণ বাড়াতে সরকারকে পরিকল্পিতভাবে নদীর নাব্যতা সংকট দূর করতে হবে। নদীতে ইলিশের বিচরণ বাড়লে জেলে-ব্যবসায়ী সবার জন্যই উপকার।’
চাঁদপুর জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্সের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী আইন অমান্য করে অভয়াশ্রম এলাকায় ইলিশ ধরার দায়ে ২৯৯ জেলে গ্রেপ্তার হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতে কারাদণ্ডসহ কিছু জেলেকে জরিমানা করা হয় এবং থানায় নিয়মিত মামলা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইলিশ গবেষক ড. আনিছুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, সাগর থেকে মিঠা পানিতে আসতে হলে ইলিশকে তিনটি ধাপ পার হতে হয়। লোনা পানি, আধা লোনা এবং মিঠা পানি। এই সাগর থেকে মিঠা পানিতে ইলিশকে আসার জন্য তার পথ সুগম করতে হবে। তাহলে নদীতে ইলিশের বিচরণ ও উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।