কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ‘অলিভ রিডলে’ প্রজাতির একটি কচ্ছপ ১২৫টি ডিম পেড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সৈকতের সোনারপাড়া এলাকায় সামদ্রিক এই কচ্ছপ ডিমগুলো পাড়ে। বালিয়াড়িতে প্রায় দুই ফুট গর্ত করে মা কচ্ছপটি ডিমগুলো পেড়ে আবারও সাগর ফিরে গেছে।
এদিকে সৈকতের পাশেই রামুর পেঁচার দ্বীপে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট (বোরি) অবস্থিত। খবর পেয়ে এই প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা কচ্ছপের ডিমগুলো সংগ্রহ করেছেন।
আজ বুধবার দুপুরে এসব ডিম ফোটানো জন্য সোনারপাড়া সৈকতের বালিয়াড়িতে বেড়া দিয়ে সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান বোরির মহাপরিচালক অধ্যাপক তৌহিদা রশীদ। তিনি বলেন, ‘ডিমগুলো বাচ্চা ফোটাতে ৬০ থেকে ৬৫ দিন সময় লাগবে। এ সময়ে বোরির বিজ্ঞানীরা গবেষণার পাশাপাশি এই হ্যাচারিটি দেখভাল করবেন। হ্যাচারিতে ডিমগুলো প্রজননের জন্যে প্রায় দুই ফুটের দুটি গর্ত খোঁড়া হয়।’
ডিমগুলো সংরক্ষণের সময় ভারতের রাজকাঁকড়া বিশেষজ্ঞ ও জৈব সমুদ্র বিজ্ঞানী গোবিন্দ চন্দ বিসওয়াল, বোরির জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম, সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য গবেষক আহমদ গিয়াস, বোরির বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. শিমুল ভুঁইয়াসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
বোরির জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘অলিভ রিডলে প্রজাতির কচ্ছপটি ১২৫টি ডিম পেড়ে সাগরে ফিরে গেছে। গত বছর একই সৈকতে একটি কচ্ছপ ৯১টি ডিম পেড়েছিল। এসব ডিম সৈকতের প্রাকৃতিক পরিবেশে সংরক্ষণ করে প্রজননের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। সেখানে ৮৪টি সুস্থ-সবল কচ্ছপের বাচ্চা ফোটানো সম্ভব হয়েছিল।’
গবেষণার কাজে কক্সবাজার আসা ভারতের রাজকাঁকড়া বিশেষজ্ঞ ও জৈব সমুদ্র বিজ্ঞানী গোবিন্দ চন্দ বিসওয়াল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কচ্ছপ প্রজননের এই পদ্ধতি অত্যন্ত কার্যকর। তবে প্রজনন বাড়াতে জনসচেতনতা সবচেয়ে জরুরি।’
কক্সবাজারে সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের পাশাপাশি পরিবেশবাদী সংস্থা নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্টসহ (নেকম) বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কচ্ছপের ডিম সংরক্ষণ ও প্রজনন প্রক্রিয়ায় কাজ করছে।