চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ, সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশসহ সাত দফা দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন ৯ শিক্ষার্থী। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চলমান থাকবে। আজ বুধবার ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীর’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের সামনে এই অনশন শুরু হয়।
শিক্ষার্থীরা হলেন বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ওমর সমুদ্র, সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি জশদ জাকির, স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাংগঠনিক সম্পাদক রাম্রা সাইন মারমা, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর রাজনৈতিক শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক আহমেদ মুগ্ধ, একই বিভাগের দপ্তর সম্পাদক নাইম শাহ জান, বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ও গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ধ্রুব বড়ুয়া, মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া শিকদার, সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের ঈশা দে এবং বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুদর্শন চাকমা।
এ ছাড়া পরে আরও দুজন শিক্ষার্থী সংহতি জানিয়েছেন। তবে তাঁরা আমরণ অনশনে বসবেন কি না, জানা যায়নি।
দাবিগুলো হলো—বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ, সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ, নিরাপত্তাহীন অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত ভ্রাম্যমাণ আবাসনের ব্যবস্থা ও আবাসনচ্যুত শিক্ষার্থীদের মালামাল উদ্ধারে উদ্যোগ, উদ্ভূত পরিস্থিতিকে ঘিরে চিহ্নিত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা এবং নিরপরাধ এলাকাবাসীদের হয়রানি বন্ধ, বৈপরীত্যমূলক দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসনে উভয় পক্ষের অন্তর্ভুক্তিমূলক সমন্বয় কমিটি গঠন, ন্যূনতম তিন মাস পরপর মিটিং করা এবং সিন্ডিকেট কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের রোডম্যাপ প্রকাশ ও বাস্তবায়ন করা।
জানতে চাইলে শিক্ষার্থী ওমর সমুদ্র আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত ৩০ ও ৩১ আগস্ট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের সংঘর্ষের ঘটনায় প্রক্টরিয়াল বডির ব্যর্থতার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সাত দফা দাবি জানিয়েছিলাম।
‘এ ছাড়া আমরা কয়েক দিন ধরে টানা আন্দোলন করছি। কিন্তু প্রশাসন আমাদের কোনো দাবি মেনে নিচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে অনশনে বসেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাব।’
আরও এক শিক্ষার্থী সুমাইয়া শিকদার বলেন, ‘সেদিনের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার পেছনে প্রক্টরিয়াল বডির ব্যর্থতার দায় আছে। তা ছাড়া গত এক বছরের মধ্যে ক্যাম্পাসে গুপ্ত হামলা হয়েছে, নারী শিক্ষার্থী বহিষ্কারকে কেন্দ্র করে তাদের বিতর্কিত ভূমিকা রয়েছে। তারা তাদের দাবি যথাযথভাবে পালন করেনি। আমরা এই প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ দাবি করছি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক কোরবান আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শুনেছি কিছু শিক্ষার্থী অনশনে বসেছে। আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাব।’